গৌতম মণ্ডল, অনির্বাণ বিশ্বাস ও হিন্দোল দে: আর জি কর কাণ্ডে পদে পদে সমালোচিত হচ্ছে সরকার। দলের নেতা-মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে যেমন, তেমনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি উঠছে। এহেন পরিস্থিতিতে দলের তরফে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হলেও, সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি চোখ এড়াচ্ছে না কারও। দলের তরফেও অভিষেককে সম্মুখ ভাগে দেখতে চাওয়ার দাবি উঠছে। এবার ডায়মন্ড হারবার থেকেও অভিষেককে এগিয়ে আনার দাবি উঠল। (Abhishek Banerjee)
আর জি করের ঘটনায় প্রতিবাদে যখন গর্জে উঠেছে গোটা দেশ, তৃণমূলের অন্দরে চলছে , সেই সময় তৃণমূলের অন্দর থেকে অভিষেককে সামনে দেখতে চাওয়ার দাবি জোরাল হচ্ছে ক্রমশ। কোথাও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ছবি দিয়ে, তো কোথাও তাঁকে ট্যাগ করেই নিজেদের দাবি জানাচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। 'সময়ের ডাক, সেনাপতি পথ দেখাক' দাবি তুলছেন অনেকেই। (RG Kar Protests)
আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার মোকাবিলায় তৃণমূলের শীর্ষস্তরেই মতভেদ তৈরি হওয়া নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে উঠেছে, সেই সময় ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কর্মীদের একটা বড় অংশের ফেসবুকে অভিষেককে চেয়ে নানা পোস্ট চোখে পড়ছে। মথুরাপুরের তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদারের ফেসবুক পেজেও এমন পোস্ট নজর কেড়েছে সকলের।
এ নিয়ে মগরাহাট পশ্চিম ব্লকের তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি ইমরান হাসান মোল্লা বলেন, "প্রিয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে নামা মানেই বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবশ্যই আর জি করের ঘটনা দুঃখজনক, বেদনাদায়ক। আজ সিবিআই-এর হাতে মামলা উঠেছে। চার-পাঁচ দিন হয়ে গিয়েছে। বাকি যদি কোনও আসামি থেকে থাকে, কেন সিবিআই তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না?"
আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার পথে নামেন মমতা। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে অভিষেককে দেখা যায়নি। শনিবার মমতার নির্দেশে মিছিলে পা মেলান ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, পার্থ ভৌমিকরা। ওই দিন ডায়মন্ড হারবারে কোনও বড় মিছিল না বেরোলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিষেককে সম্মুখ ভাগে দেখতে চাওয়ার দাবি জানান কুণাল ঘোষ।
কুণাল পরিষ্কার জানান, মমতা লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের সেনাপতি অভিষেককে সক্রিয় ভূমিকায়, সামনের সারিতে দেখতে চাইছেন নেতা-কর্মীরা। এর পরই ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল নেতাদের একাংশের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে অষেককে সম্মুখ ভাগে দেখতে চেয়ে একের পর এক পোস্ট চোখে পড়ছে। যদিও সেই নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি এবং সিপিএম। সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সাফ বক্তব্য, "নৌকা ডুবে না যায়।" তবে বিরোধীরা কটাক্ষ করলেও, আর জি কর নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে অভিষেকের অনুপস্থিতি নিয়ে পারদ চড়ছে তৃণমূলের অন্দরে।