কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। মহাকরণ অভিযানের সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর (Yuva Congress Worker)। প্রতি বছর এই দিনটিকে শহিদ দিবস (Shahid Diwas) হিসেবে পালন করে তৃণমূল। কিন্তু, যাঁদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে এই কর্মসূচি, তাঁদের পরিবার কেমন আছে ?
২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশ। তিন দশক আগে এই ২১ জুলাইতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩ জন যুব কংগ্রেসের কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজন মুরারি চক্রবর্তী। বাড়ি দমদমের ময়রাবাগানে। ২১ জুলাই দিনটা এলেই, আজও গোটা পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। মনে পড়ে যায়, গুলিবিদ্ধ মৃতদেহগুলোর কথা।
মুরারি চক্রবর্তী বরাবরই পার্টি অন্ত প্রাণ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাড়ির লোকেদের এখনও মনে আছে, ২১ জুলাইয়ের আগের দিন তাঁর শরীরটা ভাল ছিল না। তবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছেন শুনে বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি। ছুটে গেছিলেন সেখানে। তবে আর ফিরতে পারেননি।
মুরারি চক্রবর্তী। ১৯৯৩’এর ২১ জুলাই ছিল ২৯ বছরের তরতাজা যুবক। সেদিন সকালে না খেয়ে মমতার টানে ধর্মতলা গেছিলেন। মুরারি চক্রবর্তীর মৃত্যুর আট বছর পর জন্ম হয় তাঁর ভাইঝির। প্রয়াত জেঠুকে চিনেছেন বাবার কাছে গল্প শুনে। আজও তাঁর কথা বলতে গেলে, চোখে জল চলে আসে। নিহত যুব কংগ্রেস কর্মীর ভাইঝি পৌলমী চক্রবর্তী বলেন, শুনেছি, সেদিন না খেয়ে গেছিল। পার্টি অন্ত প্রাণ ছিল। বারণ না শুনে গেছিল। বুকে-মাথায় গুলি লাগে।
নিহত যুব কংগ্রেস কর্মীর ভাইয়ের স্ত্রী পলি চক্রবর্তী জানান, মমতা কথা রেখেছেন। একজনকে চাকরি দিয়েছেন।
মুরারি চক্রবর্তীর মতো ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন যুব কংগ্রেস কর্মী বন্দন দাস। ঝাড়খণ্ডের আদি বাসিন্দা বন্দন দাসের পরিবার থাকে হাতিবাগানে পুরসভার শ্রমিক আবাসনে।
২৯ বছর আগে, সেই দিনটায় মায়ের সঙ্গে কর্মসূচিতে গেছিলেন বন্দন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মা কোনওমতে বাড়িতে ফিরতে পেরেছিলেন। কিন্তু, ছেলেকে খুঁজে পাননি। কিছুক্ষণ পর, আসে ২১ বছরের তরতাজা ছেলের মৃত্যুসংবাদ।
আজও ছাদে উঠে একদৃষ্টে চেয়ে থাকেন রাস্তার দিকে। ছেলের কথা বলতে গেলে বুজে আসে মায়ের গলা।