সুদীপ চক্রবর্তী, আশিস আইচ, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ইসলামপুর: 'মমতাদি (CM Mamata Banerjee) চুপচাপ বসে রয়েছেন কেন? করিম চৌধুরীর (Abdul Karim Chowdhury) এলাকা বলে?', পঞ্চায়েত ভোটের মুখে দলনেত্রীর উদ্দেশে অস্বস্তিকর প্রশ্ন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর। বুধবার রাতে হঠাৎই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ইসলামপুরের মাটিকুণ্ডা। স্থানীয়দের বড় অংশের দাবি, ওই অশান্তি আসলে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের জের। ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যুও হয়। যে ঘটনায় সরাসরি দলের জেলা সভাপতি ও ব্লক সভাপতির দিকে আঙুল তুলেছেন, তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। সঙ্গে দলনেত্রীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে শোনা যায় তাঁকে।
কী বলেছেন ইসলামপুরের বিধায়ক?
তাঁর কথায়, 'আমার কথাগুলি শুনতেই চান না আপনি। আমি আপনাকে বলছি মমতাদি, স্টপ ইট। প্লিজ স্টপ ইট। আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পুলিশমন্ত্রী আপনি।' আব্দুল করিমের পাশে দাঁড়িয়ে, তৃণমূলকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বলেছেন, 'ওই অঞ্চল সম্পর্কে অনেকের থেকে আমি বেশি জানি। করিম সাহেব নিজে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। বলেছেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পাল্টা প্রতিবাদ করবেন। আমরা ওঁকে বলব, আপনি এক কথার মানুষ। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকুন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কী ভয়ঙ্কর অবস্থা!'
প্রেক্ষাপট...
২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই, আব্দুল করিম চৌধুরীকে গ্রন্থাগারমন্ত্রী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন তিনি। ২০২১-এর ভোটে ফের তিনি ইসলামপুরে জিতলেও, তাঁকে কোনও মন্ত্রিত্বের পদ দেওয়া হয়নি। সেখানে জেলা সভাপতি করা হয়, ২০১৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়ক হওয়া কানাইয়ালা আগরওয়ালকে। এরপর থেকেই আব্দুল করিম ও কানাইয়ালালের মধ্যে বারবার মতবিরোধ সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে সরাসরি দলনেত্রীকেও বারবার নিশানা করেছেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। গত বছর অগাস্টেও তিনি বলেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এটিই অনুরোধ থাকবে যে আমি বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও আমার বিরুদ্ধে লড়ার লোক দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। আমি মানব না। যদি আপনি বলেন যে করিমদা, আপনি পদত্যাগ করুন, আমি পদত্যাগ করে দেব।' এখানেই শেষ নয়। ইসলামপুরকে পৃথক জেলা করার দাবিতেও গণ্ডগোল হয়েছিল দলনেত্রী ও বিধায়কের। সে সব পেরিয়ে এবার ফের মমতাকে চ্যালেঞ্জ তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর।পঞ্চায়েত ভোটের মুখে যা স্পষ্টতই অস্বস্তি বাড়াতে পারে শাসকদলের।