কলকাতা : গরু পাচার কাণ্ডে CBI-র পর ED-র মামলাতেও জামিন পেয়েছেন। দীর্ঘ ১৮ মাস তিহাড়ে জেলবন্দি থাকার পর এবার বীরভূমে নিজের বাড়িতে ফিরলেন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। তাঁর জামিন পাওয়ার খবরে অনুব্রত মণ্ডলকে ফের একবার বীরভূমের 'বাঘ' বলে সম্মোধন করেছেন পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী এবং তৃণমূল বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম। এদিন তার ব্যাখ্যাও দিলেন। কেন তিনি তাঁকে 'বাঘ' বলেছেন সে বিষয়ে এবার খোলসা করলেন ফিরহাদ।


ফিরহাদ বললেন, "অনুব্রতকে বাঘ বলেছি তাঁর লিডারশিপের জন্য। এত অত্যাচারের পরেও তাঁর মনোবলেন জন্য। মানুষের সঙ্গে দলের জন্য থেকে যে দৃঢ়়তা দেখিয়েছেন, তার জন্য তিনি বাঘ।" যদিও এদিন এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা । তিনি বলেন, "দেখুন, এতদিন পর ফিরলাম। প্রায় দুই, আড়াই বছরের মতো। সবাই ভাল থাকুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে আসছেন। আমার শরীর একটু অসুস্থ। পায়ে-কোমরে বেদনা রয়েছে। কোনও বিতর্কে যেতে রাজি নই আমি। আদালতকে সম্মান করি, আইন মেনে চলি। দিদির জন্য আমি আছি এবং বরাবর থাকব।"


অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারির পর একাধিক বার তাঁকে 'বাঘ' বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। ২০২২ সালের ৫ নভেম্বর প্রথম বার একটি সভায় ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ফিরহাদকে বলতে শোনা যায়, "বীরভূমের বাঘকে কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছো তোমরা। সারাজীবন পারবে না। সেই বাঘ যখন বেরিয়ে আসবে, আজ যে শিয়ালরা হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া করছে, সব আবার খাঁচায় ঢুকে যাবে।" গরুপাচার মামলায় অনুব্রত জামিন পাওয়ার পরও একই কথা শোনা যায় ফিরহাদের মুখে। অবস্থানে অনড় থেকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি বলেছিলাম, বীরভূমের বাঘকে বেশিদিন খাঁচায় আটকে রাখা যাবে না। বাঘ খাঁচার ভিতরে থাকলে শিয়াল-হায়নারা হুমাহু করে। খাঁচা থেকে বাঘ বেরোলে তারাই লেজ তুলে পালায়।" 


এই পরিস্থিতিতে এদিন সকাল ৯টার কিছু পরে বোলপুরের নিচুপট্টিতে নিজের বাড়িতে ফিরলেন অনুব্রত। এর আগে শক্তিগড়, গুসকরা, দেওয়ানদিঘি হয়ে বোলপুরে পৌঁছন অনুব্রত। রাস্তায় বেশ কয়েকবার দাঁড়াতে হয় তাঁর কনভয়কে। এর আগে ভোর ৫.২০ টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বীরভূমের উদ্দেশে রওনা দেন অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ে সুকন্য়া মণ্ডল। অনুব্রতর বাড়িতে মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী। বাড়ির বাইরে জড়ো হন জেলা থেকে আসা বহু কর্মী-সমর্থক।