মুর্শিদাবাদ: একুশে জুলাইয়ের আগে বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayan Kabir) । ভোট সন্ত্রাস (Panchayat Poll Violence) নিয়ে সরব ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। বললেন, 'এত মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী কমিশন ও পুলিশ। এবার জঘন্যতম পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) হয়েছে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ রাজ্য নির্বাচন কমিশন।'
আর কী দাবি?
ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, 'বোমাবাজির জেরে ভোটের রেজাল্ট নেগেটিভ হয়েছে। এমন পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দায়ী কমিশন। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই পুলিশ ও কমিশনের।' এতেই শেষ নয়। হুমায়ুনের আরও প্রশ্ন, 'এই আচরণ যদি বুদ্ধবাবুর পুলিশ করত, তা হলে কি পরিবর্তন হত? অতীত ভুললে চলবে না।' বিজেপির বিডিও অফিস ঘেরাও নিয়েও বার্তা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, 'বিরোধীরা যে আন্দোলন করছে, আগামীকাল বিজেপি যে বিডিও অফিস ঘেরাও করবে তা ন্যায্য।' আগামীকাল, একুশে জুলাই উপলক্ষ্যে বিপুল জমায়েতের তোড়জোড় হচ্ছে কলকাতার ধর্মতলায়। পঞ্চায়েত ভোটে সবুজ ঝড়ের দাপটের পর তৃণমূলনেত্রী আগামীকাল কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। তার ঠিক আগের দিন, দলীয় বিধায়কের এমন বার্তায় অস্বস্তি বাড়ছে দলের। হুমায়ুন অবশ্য় বলছেন, 'দলের একনিষ্ঠ কর্মীদের মন ভেঙে গিয়েছে।তাঁরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। শেষ একুশে জুলাই ৫২টি লাক্সারি বাস ও ১৫৫টি গাড়িতে কর্মীদের নিয়ে এসেছিলাম। এবার শুধুমাত্র নিজে গাড়িতে এলাম, কর্মীরা ট্রেনে আসছেন। স্বীকৃতির অভাবে তৃণমূলকর্মীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।'
বেসুরো হুমায়ুন...
পঞ্চায়েত ভোটের মুখেই 'বেসুরো' শোনাতে শুরু করেছিল ভরতপুরের বিধায়ককে। ন'দশ দিন আগেও দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে ভোট-হিংসা নিয়ে বলেছিলেন, 'দিদি মুখ্যমন্ত্রী-পুলিশমন্ত্রী, কেন মুর্শিদাবাদে খুনের রাজনীতি হবে?' 'স্বার্থান্বেষী তৃণমূল নেতৃত্ব মুর্শিদাবাদের মানুষের অধিকার খর্ব করছে','এখানে অবাধ-শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে, বলা যাবে না। এত মানুষের প্রাণহানি, হিংসার পর শান্তিপূর্ণ বললে মিথ্যাচার করা হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলে পরিস্থিতি এমন হত না। প্রশাসন কোথাও অতি সক্রিয় থেকেছে, কোথাও নিষ্ক্রিয় থেকেছে। যাঁরা নেতৃত্ব দেয় তাঁদের কথা ও কাজ এক হতে হবে। মুখে ভাল কথা বলে ভিতরে হিংস্রতা দেখালে দ্বিচারিতা হয়। ক্ষমতা কারও চিরস্থায়ী নয়, যাঁরা এই কাজ করছেন, ঠিক করছেন না।' তার আগে, জুন মাসের শেষ দিকেও তৃণমূলের জন্য কাঁটা হয়ে বিঁধেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বলে দিলে তিনি পদত্যাগ করতেও প্রস্তুত!' প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষের জেরেই এমন মন্তব্য তাঁর।