কলকাতা: বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না এখনই। তবে এবার নতুন দল গঠন নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। জানালেন, আসাদউদ্দিন ওয়েইসির All India Majlis-e-Ittehadul Muslimeen-এর সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন দল গড়বেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ওয়েইসির সঙ্গে কথা হয়েছে বলে দাবি হুমায়ুনের। (Humayun Kabir New Party)

Continues below advertisement

হুমায়ুন জানিয়েছেন, ওয়েইসির সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। তাঁকে হায়দরাবাদ যেতে বলেছেন ওয়েইসি। AIMIM-এর সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন দল গড়ার কথা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২২ ডিসেম্বর নতুন দল ঘোষণা করে মুর্শিদাবাদে সম্মেলনও করার ঘোষণা করেছেন হুমায়ুন। (Humayun Kabir-AIMIM Alliance)

সংবাদমাধ্যমে হুমায়ুন বলেন, "আমি একটা রাজনৈতিক দল। আমাকে তো দল করতেই হবে। শুধু বাবরি মসজিদ করার জন্য আমাকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। আগামী ২২ তারিখ আমার নতুন দল হচ্ছে। সেই দল হওয়ার পর আমি শীঘ্রই দলের রাজ্য সম্মেলন করব এই মুর্শিদাবাদে। আমার নতুন দল, অন্য দলে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন নেই। আমি দলের চেয়ারম্যান হব। ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৩৫টিতে আসনে আমি লড়াই করব। বাকি আমার সঙ্গে AIMIM-এর আসাদউদ্দিন ওয়েইসির সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁর সঙ্গে জোট গড়ব। ওংর সঙ্গে কথা বসেছি। হায়দরাবাদে ডেকেছেন আমাকে। সময় পেলেই যাব। মুখোমুখি বসব ওঁর সঙ্গে। দলগঠনের পর আমার যে কর্মী সম্মেলন হবে, রাজ্য সম্মেলন হবে মুর্শিদাবাদে, তাতে ওয়েইসি সাহেবকে নিমন্ত্রণ করব। আমার সঙ্গে বসা জন্য উদগ্রীব ওয়েইসি।"

Continues below advertisement

শুধু ওয়েইসি বা AIMIM নয়, নৌশাদ সিদ্দিকির ISF এবং বামেদেরও পাশে পেতে আগ্রহী হুমায়ুন। তিনি বলেন, "AIMIM তো ফাইনাল। এর সঙ্গে যদি আইএসএফ আসে, স্বাগত জানাব। বামফ্রন্টের নেতারা থাকতে চাইলে আপত্তি নেই আমার। কংগ্রেসকে নিয়েও আপত্তি নেই। সকলকে নিয়ে আমার একটাই টার্গেট, বিজেপি-কে বাংলায় ক্ষমতায় আসতে না দেওয়া এবং আরএসএস মার্কা মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করা।" গতকাল রাতেই ওয়েইসির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। 

যদিও হুমায়ুন আহ্বান জানালেও, শতরূপ ঘোষ বলেন, "পুজোর আগে প্যান্ডেলের বাইরে অনেক রোলের দোকান বসে। আবার পুজো হয়ে গেলে উঠে যায়। তেমনই ভোটের আগে এমন কিছু দল তৈরি হবে। এসব নতুন কিছু নয়। আগেও হয়েছে। তবে বাংলার রাজনীতিতে কম হতো এসব। ইদানীং কালে সেগুলোও হচ্ছে। বামেদের সঙ্গে জোটে আপত্তি নেই বলে হুমায়ুন কবীর আমাদের ধন্য করে দিচ্ছেন না! আমাদের আপত্তি আছে কি না, তা আমরা ঠিক করব। উনি নতুন দল গড়তেই পারেন, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি করার অভিজ্ঞতা আছে ওঁর। এবার না হয় AIMIM করবেন! অন্য কোনও দলও করতে পারেন। আমরা রাজনীতি করি, আমাদের কিছু মৌলিক অবস্থান আছে। আমাদের সবচেয়ে বড় অবস্থান হল ধর্মনিরপেক্ষতা। রাজনীতি ও ধর্মকে আলাদা রাখা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সরকারি টাকায় মন্দির গড়েন, আমরা নিন্দা করেছি। উল্টো দিকে, এমন একটা রাজনৈতিক দল বা নেতা রয়েছেন, যাঁর মুখে স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল-রাস্তা শুনলাম না, শুধু শুনছি, মসজিদ হবে, সৌদি থেকে টাকা আসবে। রাজনীতির নামে মন্দির এবং মসজিদের বিরোধী আমরা। স্কুল-কলেজ-হাসপাতালের পরিবর্তে এসব করলে বোঝাপড়ার সুযোগ নেই। কংগ্রেস, ISF কী করবে, তারা ঠিক করবে।"

রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য রায় দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের মানুষ। তাতেই জিতেছেন হুমায়ুন। কেউ দলের ঊর্ধ্বে নন। দল হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করেছে। তাই এর পর তিনি কী করবেন, তার দায়িত্ব তৃণমূল নেবে না।

এর আগে, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। কিন্তু এদিন সেই ঘোষণা থেকে পিছু হটেন তিনি। জানান, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না তিনি। ভরতপুরের মানুষই তাঁকে ইস্তফা দিতে নিষেধ করেছেন।