কলকাতা: SSKM হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মদন মিত্র। সাধারণ মানুষের কাছে SSKM বয়কটের আর্জি জানালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক। দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীকে ভর্তি করাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ মদনের। রোগীকে ছ'ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্সেই রেখে দিতে হয় বলে অভিযোগ।
স্বাস্থ্য সচিব, মন্ত্রীকে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা, দাবি মদনের (Madan Mitra)।


মদন জানিয়েছেন, বাইক দুর্ঘটনায় আহত শুভদীপ পাল সরকারি হাসপাতালেরই ল্যাব টেকনিশিয়ান। তাঁর এই অবস্থা হলে, সাধারণ মানুষের কী অবস্থা? প্রশ্ন তোলেন মদন। তাঁর অভিযোগ, SSKM-এ দালালরাজ চলছে। টাকার খেলা চলছে চারিদিকে।  টাকা দিলে তবেই মেলে স্বাস্থ্য পরিষেবা। এ নিয়ে মামলার হুঁশিয়ারি দেন।


এমনিতে সহাস্য মুখেও দেখা যায় মদনকে। কিন্তু SSKM হাসপাতালে কার্যত রুদ্রমূর্তিতে ধরা দিলেন তিনি। হাসপাতালে ঢোকার মুখে পুলিশ এবং কর্মীদের প্রশ্ন ছুড়ে দিতে শোনা গেল, "রোগী ঢুকতে দেননি কেন? ডাকুন মেডিক্যাল অফিসারকে। কী চলছে এসব?" তার আগে, হাসপাতালের বাইরে সংবাদমাধ্যমেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। 


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: কুন্তলে চিঠির জন্য অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ, সারদাকর্তার চিঠি নিয়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয় কেন, প্রশ্ন তৃণমূলের


মদনের বক্তব্য, "এই যে ট্রমা কেয়ার তৈরি হয়েছে, সেটা জনগণের ট্রমা কেয়ার। কোনও দাদা, বাবা বা অন্য কারও নয়। এরা ভর্তি করতে না পারলেও, রোগী তো দেখবে! চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আমাকে দুঃখ করে বলেন, 'আমায় তো বলছো, কিন্তু কাউকে তো পাব না।' পাব না মানে! ট্রমা কেয়ার তো এটা! ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার কথা। ডিরেক্টর এবং এমও কেউ ফোন ধরেন না। আমার নয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কাউকে ধরা যাবে না, রাত হয়ে গিয়েছে। অরূপ বিশ্বাস বলেন, "এখনই বলছি পেশেন্টকে দেখার জন্য।' আমি মদন মিত্র। এটা সিপিএম-এর আমল হলে এক মিনিট লাগত ভর্তি করতে। উল্টে অরূপকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মেসেজ দিল, 'দেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে, আমাদের ক্যাপাসিটি নেই'।"


SSKM-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে গিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপও দাবি করেন মদন। তা না হলে SSKM বয়কটের ডাক দেন। তিনি বলেন, "আমি মদন মিত্র অভিযোগ করছি। সে নো টু পিজি। জনগণের কাছে আমার আবেদন, যত ক্ষণ না মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন, সে নো টু পিজি। তোমাদের যত টাকা লাগে, হাতের ঘড়ি আংটি বিক্রি করে রোগীর চিকিৎসা করাব। রোগী যেতে যেতে যদি মরে যায়, এমও-র নামে কেস দেবেন। মামলা লড়ব আমি। ১০ কোটির ক্ষতিপূরণ। আমরা আসার পর যদি এই অবস্থা হয়,গরিব মানুষগুলোর কী অবস্থা। ভিখারির মতো পড়ে রয়েছে! বাইরে থেকে এসে দালাল ঘুরছে। জ্য়াক লাগাচ্ছে, ট্রমায় ভর্তি করতে ১০, ২০, ৫০ হাজার। পিজি-র সুপার, ডিরেক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি বিধানসভার সদস্য হিসেবে।"


একসময় এসএসকেএম হাসপাতালের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন মদন। রোগী ভর্তি করাতে অসংখ্য মানুষ তাঁর সহযোগিতা পেয়েছেন। একথা কারও অজানা নয়। সারদাকাণ্ডে গ্রেফতারির পরে একসময় দীর্ঘদিন এই এসএসকেএমেই ভর্তি ছিলেন মদন। 


এমনিতে মদনের সহাস্য চেহারা দেখতেই অভ্যস্ত বাংলার জনগণ। সেই মদনের রুদ্রমূর্তি দেখে অবাক অনেকেই। এমনিতেই বিগত কিছু দিন ধরেই দলের খুঁটিনাটি বিষয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মদন। SSKM-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে গিয়ে এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করলেন তিনি।