কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই নিয়ে রাজ্য রাজনীতি যখন তোলপাড়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) গ্রেফতারির দাবি তুলল তৃণমূল। কুন্তল ঘোষের চিঠির ভিত্তিতে যদি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে সারদা কর্তা (Saradha Case) সুদীপ্ত সেনের (Sudipta Sen) চিঠির ভিত্তিতে শুভেন্দুকে কেন ডাকা হচ্ছে না, কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না তাঁকে, প্রশ্ন তুলল জোড়াফুল শিবির।


অভিষেকের নাম নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে আদালতে চিঠি দিয়েছিলেন যুব তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল। সেই নিয়ে সম্প্রতি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে অনুমোদন দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। তার পরই শুক্রবার অভিষেককে নিজাম প্যালেসে তলব করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। সেই মতো শনিবার সকালে CBI দফতরে পৌঁছে যান অভিষেক। 


আর অভিষেকের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে যখন, সেই সময় সংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেখানে জেল থেকে সারদাকর্তা সুদীপ্তর চিঠির প্রতিলিপি তুলে ধরেন তিনি, যাতে শুভেন্দু তাঁর থেকে বিপুল টাকা নিয়েছেন বলে দাবি করেন সুদীপ্ত। মামলার অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও সেই চিঠির ভিত্তিতে কেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, প্রশ্ন তোলেন কুণাল। 


এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, "কোনও অভিযোগ ছিল না। শুধুমাত্র কথার ভেলকিতে কেউ কেউ বললেন, নামের উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং তাঁকে ডাকতে হবে। আমাদের প্রশ্ন, কুন্তল ঘোষের চিঠিতে কোনও অভিযোগ নেই। সেই চিঠির ভিত্তিতে যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ভাবে ডেকে পাঠানো হয়, তাহলে সুদীপ্ত সেনের চিঠির ভিত্তিতে শুভেন্দু অধিকারীকে জেরা এবং গ্রেফতার করা হবে না কেন?"


আরও পড়ুন: West Bengal News Live Updates : নিজাম প্যালেসে অভিষেক, তৈরি ৫ পাতার প্রশ্নমালা


প্রেসিডেন্সি জেল থেকে প্রিজনার্স পিটিশন মারফত আদালতের উদ্দেশে একাধিক চিঠি লেখেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত। তাতে কাঁথি পুরসভার কাছ থেকে প্ল্যান স্যাংশনের জন্য ৫০ লক্ষ ড্রাফ্টে এবং ২০ লক্ষ টাকা নগদে দিয়েছিলেন বলে দাব করেন। শুভেন্দু এবং তাঁর লোকজনকেও প্রচুর চাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন সুদীপ্ত। আদালত থেকে তার প্রতিলিপি তুলে এনেছে তৃণমূল। 


এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে সেই চিঠির প্রতিলিপিই তুলে ধরেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, "একজন বিচারাধীন বন্দি নিজের বয়ান লিখেছেন। পদ্ধতিগত ভাবে সেটি মামলার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিতিবিরক্ত হয়ে সুদীপ্ত লিখেছেন, 'আমি একের পর এক অভিযোগ করে গেলেও, তার তদন্ত হচ্ছে না কেন?' ৫০ লক্ষের ড্রাফ্ট, নগদে ২০ লক্ষ এবং বাকি হিসেবও পর পর চিঠিতে দিয়েছেন। সারদাকর্তা খোদ অভিযোগ করছেন যে, 'আমি এতদিন জেলে রয়েছি। কিন্তু যারা ভুল বুঝিয়ে টাকা নিল আমার কাছ থেকে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না'। কাঁথি নিয়ে যাওয়ার পর্বও বিশদে লিখেছেন সুদীপ্ত।"


 কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED-কেও নিশানা করেন কুন্তল। বলেন, "ইডি সবার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে বেড়াচ্ছে, নগদে। অথচ সুদীপ্তর উল্লেখিত টাকা উদ্ধার হচ্ছে না কেন?" সুদীপ্তর সেই চিঠি নিয়ে আগেও কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। নিজাম প্যালেসে অভিষেককে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, আরও একবার সেই প্রসঙ্গ তুলে আনল তারা।