কলকাতা: উপনির্বাচনে তৃণমূলের (TMC) হাতছাড়া হয়েছে সাগরদিঘি বিধানসভা (Sagardighi Bypolls) কেন্দ্র। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হয়ে গিয়েছিল যে কংগ্রেস (Congress), তৃণমূলের হাত থেকে সাগরদিঘি ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। দলের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জোটের শরিক বামেদের সমর্থনে বিজয়ী হয়েছেন। ফলে ফের একবার বিধানসভায় প্রবেশের অধিকার আদায় করে নিয়েছে কংগ্রেস। সাগরদিঘির এই জয় কংগ্রেসকে যেমন অক্সিজেন জুগিয়েছে, তেমনই বেকায়দায় ফেলেছে তৃণমূলকে। সেই আবহে ফের দলকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। দলের মধ্যে অন্তর্ঘাতের চক্রান্ত চলছে বলে দাবি করলেন তিনি।
ফের একবার বিধানসভায় প্রবেশের অধিকার আদায় করে নিয়েছে কংগ্রেস
সাগরদিঘির ফলাফল নিয়ে একদিকে যেমন কাটাছেঁড়া চলছে, সেই আবহে রবিবার এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন মদন। তিনি বলেন, "দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা-ই ঠিক। দলীয় কর্মী হিসেবে আমার মনে হয়েছে যে, দলের মধ্যে অন্তর্ঘাত রয়েছে। একটা চক্রান্ত রয়েছে। যে, যত বড় নেতাই হোন না কেন, দল কাউকে রেয়াত করবে না। প্রত্যেকের গতিবিধির উপর নজর রাখা উচিত।"
মদনের এই মন্তব্যে যদিও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা। বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তিনি মদন মিত্র। তাই শুধু এই টুকু বলতে পারি যে, ওরা দিঘিতে ডুবেছে, সাগরে ডুবতে চলেছে। এই বক্তব্য, আত্মসমালোচনা, অন্তর্ঘাত, সব অপ্রাসঙ্গিক। মানুষের কাছে তৃণমূলের কোনও বক্তব্যই এখন প্রাসঙ্গিক নয়।"
আরও পড়ুন: Rudranil Ghosh: ‘মাটির মানুষ লেবেল তোমার…’,কবিতায় ফের মমতাকে নিশানা রুদ্রনীলের
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "তৃণমূলে তোলাবাজি থাকবে না, পারস্পরিক লড়াই থাকবে না, বখরার ভাগাভাগি থাকবে না, এটা কল্পনা করা যায় নাকি! এটা একটা সার্কাস পার্টি। করে খাওয়ার জায়গা। তৃণমূলের নেতারাই বলছেন। এর মধ্যে নতুন কী! মদন মিত্র রাগ-দুঃখ করেছেন হয়ত, সেই কারণে বলেছেন।"
কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "তৃণমূল খুব শীঘ্রই বিদায় নেবে। তখন তদন্ত করে দেখবেন। এখন এসব করে লাভ নেই। গোটা সরকারের পতন হবে। বাংলা থেকে তৃণমূলের সরকারকে উৎখাত করবেন মানুষই। এখন পিসি এবং ভাইপো তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। তাই এমন মন্তব্য আসছে। "
সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয়ে তৃণমূলের চিন্তার কারণ নেই বলে মত মমতার
তবে বিরোধীরা সাগরদিঘির ফলাফল নিয়ে সুর চড়ালেও, এই জয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম-কংগ্রেস জোটকেই 'অনৈতিক' বলে উল্লেখ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাম, কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূলকে হারাতে পরস্পরের মধ্যে ভোট হস্তান্তরও করে বলে দাবি করেন। তাদের কাউকে নিয়ে তৃণমূলের চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানান।