কলকাতা: তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকার খুন হওয়ার ১২ দিনের মধ্য়ে মালদায় ফের রক্ত ঝরল। আবারও তৃণমূলের হাতে খুন তৃণমূল। জেলা সহ-সভাপতির পর, এবার গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে মালদায় নৃশংসভাবে খুন করা হল এক তৃণমূল কর্মীকে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ও তাঁর ভাই। ঘটনাস্থলে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলির ছবি দেখা গেলেও মালদার পুলিশ সুপারের দাবি, নিহত কিংবা আহতদের দেহে গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন প্রশ্ন তুলছেন, তেমনই দলের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন সুজাপুরের তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আব্দুল গনি। (Malda News)


গত ১২ দিনে এই নিয়ে মালদায় পর পর শাসকদল তৃণমূলেরই দু'জন খুন হলেন। ফলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হলে আব্দুল গনি। মালদার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদর দাবি, মতপার্থক্য, দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু পুলিশের ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়। দুলাল যেখানে খুন হয়েছিলেন, তার কাছাকাছিই ফের তৃমূলের এক কর্মী মারা গেলেন। পুলিশের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল বলে মত আব্দুল গনির। পুলিশ তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে না বলেও দাবি তাঁর। (Muhammad Abdul Ghani)


এর পাশাপাশি, দলের অন্দরে দুর্নীতিগ্রস্তদের রমরমা বেড়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আব্দুল গনি। তাঁর কথায়, "এখন যাঁরা পার্টি করছেন, কোটি কোটি টাকা রোজগার করছেন। কেউ পার্টি করে ১ কোটি আয় করছেন, আর আমি ১০ টাকাও পারি না। তাহলেই বুঝুন। আগে এসব কিছু ছিল না। একতলা বাড়ি ছিল না যাঁর, এখন তাঁর তিনতলা বাড়ি, ৫০ বিঘে জমি হয়েছে।"


বর্তমান দিনে রাজনীতিতে সৎ লোকের সংখ্যা এমনিতেই কম, তৃণমূলেও সৎ লোকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলেও দাবি আব্দুল গনির। তিনি বলেন, ",সৎ এবং পক্ষপাতহীন লোকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সব দলেই হচ্ছে, আমাদের দলেও হচ্ছে। কেউ সম্পূর্ণ ভাবে কথা শুনছে না। প্রশাসনিক শীর্ষ স্তরে যাঁরা রয়েছেন, সেই নেতাদের কথাও শোনা হয় না। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি। এটা নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের। ভাল লোকজনকে দায়িত্ব দিতে হবে, যাঁরা বিশ্বস্ত, সমাজ যাঁদের ভাল বলে।"


গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই মালদায় নৃশংসভাবে তৃণমূল কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। আব্দুল গনি জানিয়েছেন, যিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং তাঁর যে ভাই আহত হয়েছেন, তাঁদের লোকবল বেশি ছিল। অন্য পক্ষ সেটা সহ্য করতে পারছিল না। সেই থেকেই হামলা। পুরোপুরি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকেই খুন বলে দাবি করেছেন তিনি। এভাবেই তৃণমূলের মালদার সহ-সভাপতি দুলালকে ধাওয়া করে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনায় তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ!