কলকাতা: রাজনীতিতে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সেই আবহেই এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব। ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরই কালীঘাটে মমতার বাড়িতে পৌঁছলেন (Mamata Banerjee)। রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েই দফায় দফায় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক দেবের? উঠছে এই প্রশ্ন। (Dev Meets Mamata)
শনিবার বিকেলে প্রথম তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করেন দেব। ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে বিকেল ৪টে নাগাদ প্রথম পৌঁছন অভিষেক। তার পর সাড়ে ৪টে নাগাদ পৌঁছন দেব। সেখানে প্রায় ৫০ মিনিট বৈঠক হয় তাঁদের মধ্যে। সূত্রের খবর, কেন দেব প্রার্থী হতে চাইছেন না, জানতে চান অভিষেক। সেই নিয়ে দু'জনের মধ্যে কথা হয়। এর পরই সেখান থেকে বেরিয়ে মমতার বাড়িতে পৌঁছন দেব।
সামনে লোকসভা নির্বাচন। সেই নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে প্রস্তুতি চলছে। সেই আবহে দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন দেব। অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে দেব আর দলের প্রার্থী হতে চান না বলে খবর। 'আমি থাকি বা না থাকি' বলে সম্প্রতি সংসদে যে মন্তব্য করেন, ১০ বছর সুযোগ দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে ভাবে ধন্যবাদ জানান, তাকে তৃণমূলের উদ্দেশে দেবের বিদায়ী বার্তা বলেও ধরে নেন অনেকে।
আরও পড়ুন: Dev-Abhishek Meeting: হঠাৎ অভিষেকের দফতরে দেব, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার মধ্যেই একান্ত সাক্ষাৎ
সেই নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেন বিজেপি-র রুদ্রনীল ঘোষ। তৃণমূলে থাকার মতো মানসিকতা আর দেবের নেই বলে জানান তিনি। শুধু তাই নয়, শীঘ্রই বিজেপি-র কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেব বৈঠক করতে পারেন বলেও দাবি করেন। সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, দেব যদিও সোজাসাপটা উত্তর দেননি। দলকে যা জানানোর, জানিয়ে দিয়েছেন, মমতা বাকি কথা বলবেন বলে জানান। তার পরই কলকাতায় অভিষেকের সঙ্গে দেখা করলেন দেব।
ঘাটাল থেকে তৃণমূলের প্রতীকে দু'বার জিতেছেন দেব, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে। তবে বছর দেড়েক আগে, সরকারি প্রেক্ষাগৃহ নন্দনে দেবের ছবি 'প্রজাপতি'র শো না পাওয়া নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, "দেব শিল্পী। ভাল ছেলে। দলের সম্পদ দেব।"
এর পরই হঠাৎ তিনটি সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন দেব, তাতে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। দেব তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন, আর প্রার্থী হতে আগ্রহী নন, বলে দাবি ওঠে। বিজেপি-র বিধায়ক, দেবের সতীর্থ হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় আবার দেবকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাবি করেন। দেব কাটমানি চাইছেন বলে একটি অডিও ক্লিপও ভাইরাল হয়ে যায়, যাতে সাংসদ তহবিল থেকে দেব ৩০ শতাংশ কাটমানি চাইছেন বলে দাবি করা হয়। ওই অডিও ক্লিপে যে গলা শোনা গিয়েছে, তা ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়ের বলে দাবি করেন দেবের প্রতিনিধি।