অনির্বাণ বিশ্বাস ও অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, ডোমজুড়: ডোমজুড়ের (Domjur Meeting) মাটিতে বিজেপিকে (BJP) কীভাবে হারাতে হয় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) দেখিয়েছে। মাথা তো নোয়াতে হয়েছে তৃণমূলের কাছে, ডোমজুড়ের সভা থেকে নাম না করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Rajib Banerjee) আক্রমণ তৃণমূল সাংসদ কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Kalyan Banerjee)। এনিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্ব নিয়ে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি।


কী বললেন কল্যাণ? 
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, সংগঠন মজবুত করতে হাওড়ার ডোমজুড়ে সভা করে তৃণমূল। সেখানেই শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'মাথা তো নোয়াতে হয়েছে সেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এসে মাথা নোয়াতে হয়েছে। বলতে হয়েছে, একটু জায়গা দাও মা, তোমার মন্দিরে বসি।' রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নাম না করে তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কেই আক্রমণ করেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সব মিলিয়ে ঘটনায় ফের প্রকাশ্য়ে চলে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব! ২০২১-এর ২৯ জানুয়ারি, বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বিধায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে, অমিত শাহর পাঠানো চার্টার্ড বিমানে তড়িঘড়ি দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। গত বিধানসভা ভোটে, ডোমজুড় থেকেই তাঁকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু ৪০ হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূলের কল্যাণেন্দু ঘোষের কাছে পরাজিত হন তিনি। এরপর থেকেই আর বিজেপিতে তেমনভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উল্টে, ৯ মাসের মাথায়, বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন তিনি। পরবর্তীকালে, রাজীবকে ত্রিপুরায় দলের দায়িত্ব দিয়ে পাঠায় তৃণমূল। এবার, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ডোমজুড়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে, বিজেপি ফেরত তৃণমূল নেতা, রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম না করে তাঁকে নিশানা করলেন কল্য়াণ। বললেন, 'আমরা বিজেপিকে কীভাবে হারাতে পারি, রাজনৈতিক লড়াইয়ে তা ২০২১ সালে দেখিয়েছি। ২০২২-এ বিভিন্ন মিউনিসিপ্য়ালিটি নির্বাচনেও দেখিয়েছি। ... আমরা ভাল করে দেখিয়েছি, ডোমজুড়ের মাটিতে কীভাবে বিজেপি পার্টিটাকে... কীভাবে হঠিয়েছি... আমরা লড়াই করেছি। ...এই মাটি তৃণমূল কংগ্রেসের মাটি। এখানে বিজেপির মাটি নয়। এই মাটি তৃণমূল কর্মীদের মাটি।' কিছুটা একসুর শোনা যায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়। বলেন, 'ভোটের আগে যারা চার্টার্ড ফ্লাইটে গিয়েছিল তারা ভোটের পর অটো পাঠাতে বলেছিল। যাবি কোথায়? সেই তো তৃণমূল এই ফিরবি।' এভাবে ভোটের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। সব দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, শাসকদলের এই কোন্দল বিরোধীদের বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে না তো?


আরও পড়ুন:মাছ খান না? ডিমে অ্যালার্জি? প্রোটিন মিলবে কীভাবে?