কলকাতা : 'আপনাকে ভবানীপুরে হারাব। আরও ৫ বছর হারার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হবে।' দিনকয়েক আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার পাল্টা বিরোধী দলনেতাকেই নন্দীগ্রামে হারানোর কথা বললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সাংসদ বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টের আশীর্বাদ আছে বলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর বড় বড় কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন। নাহলে ওঁর এতদিন জেলাখানায় থাকার কথা ছিল। ভারতে-বাংলায় ওভাবে কখনো নেতা হওয়া যায় না। যে মানুষ প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে সম্মান করতে পারেন, প্রত্যেক জাতির মানুষকে সম্মান করতে পারেন, সেই নেতা হবেন। গান্ধীর দেশে যাঁরা ভেদাভেদ করেন, তাঁরা রাজনীতিতে থাকার যোগ্য নন। ভারতের সংবিধানকে জানতে হবে আগে। যিনি জানেন না, অবজ্ঞা করেন তিনি আবার রাজনীতিক কী ? তবে, এটুকু আপনাদের মাধ্যমে বলে দিচ্ছি, নন্দীগ্রামে এবার ওঁকে হারিয়ে ছাড়ব। আর ওঁর এমএলএ হিসাবে মেয়াদ মাত্র এক বছর। তারপরে রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে।"
গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মহাকাব্য়িক লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছিল বঙ্গবাসী। এবার কি এপিক ব্য়াটলের স্থান পরিবর্তন হতে পারে ? স্থান পরিবর্তন করে তা সমুদ্র পাড়ের জেলা থেকে একেবারে গঙ্গা পাড়ের কলকাতায় চলে আসতে পারে? যে বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বর্তমানে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বিধায়ক, সেই ভবানীপুরে কি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দাঁড়াবেন শুভেন্দু অধিকারী?
বিরোধী দলনেতা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, "আপনাকে ভবানীপুরে হারাব। আরও ৫ বছর হারার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হবে। যেভাবে নন্দীগ্রামে হারার যন্ত্রণায় চিৎকার করছেন।"
শুভেন্দু অধিকারীর ভবানীপুর থেকে লড়াইয়ের জল্পনা নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় করেছেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছেন, "শুভেন্দুবাবু যদি ভবানীপুরে...আমাদের কাছে প্রস্তাব দেন, দলের কাছে, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন উনি, আমরা অবশ্যই সেই প্রস্তাবকে সাদরে গ্রহণ করব এবং এটা আমারও বিশ্বাস শুভেন্দুবাবু যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভবানীপুরে দাঁড়ান, তাহলে অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুবাবুর কাছে পরাজিত হবেন।"
২০২১ সালে নন্দীগ্রামে পরাজয়ের পর বিধানসভা উপ নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের ৮টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে ৫টিতেই এগিয়ে বিজেপি। মাত্র ৩টি এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের নিরিখে ভবানীপুরে ১৭৬ ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে, সেখানে বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল।