কলকাতা : রাজ্যপাল ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত সপ্তমে। সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করলেন কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়। আইনজীবী মারফত অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল সাংসদ। পুলিশকে চিঠিতে কল্যাণ আর্জি জানিয়েছেন, 'তদন্ত করে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হোক।' রাজ্যপাল শব্দটি তাঁর অভিযোগে ব্যবহার করেননি কল্যাণ। পাঁচ পাতার অভিযোগপত্রে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লিপিংস দিয়ে চিহ্নিত করে দাবি করা হয়েছে, সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেগুলো তদন্ত করে দেখা হোক। এটা বঙ্গ রাজনীতিতে কার্যত নজিরবিহীর ঘটনা। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হল। এবং যিনি সাংবিধানিক পদে আছেন, তিনিও শাসকদলের একজন সাংসদের বিরুদ্ধে এভাবে অভিযোগ দায়ের করছেন। গতকালই হেয়ার স্ট্রিট থানায় চার বারের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রাজ্যপাল।
একেবারে সম্মুখ সমরে বোস VS বন্দ্যোপাধ্য়ায়। একধাপ এগিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন-অযোগ্য ধারায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। পাল্টা সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্য়াণ।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। শনিবার SIR-এর সমর্থনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ শানান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "রাজ্যপালকে আগে বলুন যে রাজ্যপালের ভবনে যেন বিজেপির সমস্ত ক্রিমিনালদের রাজভবনে না রাখে। রাজভবনে বসে ক্রিমিনালদের রাখছেন আর সবাইকে একটা করে বন্দুক দিচ্ছেন, বোমা দিচ্ছেন, মেরে এসো তৃণমূলের লোকেদের। আপনি আগে সব এগুলো বন্ধ করুন। আপনার মতো অপদার্থ রাজ্যপাল যতদিন থাকবে, বিজেপির চাকরবাকর রাজ্যপাল যতদিন থাকবে, ততদিন ভাল জিনিস পশ্চিমবাংলায় কোনওদিন দেখতে পাবেন না।" সত্য সামনে আনতে রবিবার ভোর থেকেই জনসাধারণের জন্য রাজভবনের দরজা খোলা রেখেছিলেন রাজ্যপাল। সোমবার, একেবারে CRPF, বম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াডকে ডেকে এনে রাজভবনে তল্লাশি অভিযান চালান তিনি।
এইপরই মঙ্গলবার রাজভবন সূত্রে খবর, একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাজ্যপাল। তারমধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালকে আক্রমণ করা, এমন অপরাধ যা ভারতের সর্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে ও জাতীয় সংহতিকে নষ্টের অভিযোগের ধারা।
সবমিলিয়ে, রাজ্যপাল ও কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সংঘাতের জল এখন কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।