কলকাতা: টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানিদের নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ। আগামী ২ নভেম্বর সংসদের নীতি কমিটির সামনে হাজিরা। তার আগে বিজেপি-কে কার্যতই তুলোধনা করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। তাঁর মুখ বন্ধ রাখতেই বিজেপি এই মিথ্যে অভিযোগ এনেছে বলে দাবি মহুয়ার। শুধু তাই নয়, শীতকালীন অধিবেশন থেকে তাঁকে দূরে রাখাই বিজেপি-র লক্ষ্য বলেও দাবি করলেন। 


আগামী ২ নভেম্বর নীতি কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা মহুয়ার। তার আগে মঙ্গলবার এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন তিনি। বলেন, "বিজেপি ভাবে সবাই গাধা। কিন্তু সবাই গাধা নয়। আমি যদি আপরাধ কিছু করেও থাকি, সংসদের নীতি কমিটির কিছু করার এক্তিয়ার নেই। তারা শুধু চালচলনই দেখতে পারে। এসব করে মিডিয়া ট্রায়াল চালানো হচ্ছে।" (Cash for Query)


শীতকালীন অধিবেশনের আগে তাঁর মুখ বন্ধ করতেই বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ এনেছে বলেও এদিন দাবি করেন মহুয়া। তিনি বলেন, "নীতি কমিটিতে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ। ওদের সাত জন সদস্য, আমাদের পাঁচ জন। ওরা আমার সাসপেনশন সুপারিশ করতে পারে স্পিকারের কাছে। শীতকালীন অধিবেশনে সেই সুপারিশ পেশ করবেন স্পিকার। সংসদেও ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সুপারিশ পড়লেই ওদের ৩০৩ সদস্য হ্যাঁ হ্যাঁ বলবেন। তাতে শীতকালীন অধিবেশনে আমার থাকা হবে না। কারণ ওরা জানে আমরা যা যা প্রশ্ন নিয়ে তৈরি, তাতে ওদের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ভাবছে আমাকে আসতে দেবে না। কিন্তু এসব করতে গিয়ে আমাকে ঝাঁসির রানি করে দিচ্ছে ওরা। সংসদে না গেলেই চুপ করে থাকব আমি?"


আরও পড়ুন: Mahua Moitra: প্রমাণ থাকলে নীতি কমিটিতে ডাকত না, ভিতরে ঢুকিয়ে দিত BJP, বললেন মহুয়া


এদিন ফের আদানিদের বিরুদ্ধে সরব হন মহুয়া। বলেন, "আজ প্রত্যেক বন্দর, বিমানবন্দর আদানি কিনে নিয়েছে। অথচ আদানি গোষ্ঠীর মালিক কে কেউ জানে না। চিনা নাগরিক , সংযুক্ত আরব আমিরশাহির নাগরিকরা বিদেশি বিনিয়োগকারী। SEBI পর্যন্ত জানিয়েছে, আসল মালিক কে, কেউ জানে না। তার পরও ওদের প্রত্যেক বন্দর, বিমানবন্দর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এখানে মহুয়া মৈত্র কাকে পাসওয়ার্ড দিয়েছে, তা নাকি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়! প্রত্যেক সাংসদ ১০ জনকে ওই পাসওয়ার্ড দেন। বিজেপি-র অশিক্ষিত লোকজন তো প্রশ্ন পড়তেও পারেন না।"


মহুয়া জানিয়েছেন, নিজের সংসদীয় ইমেল আইডি বা পাসওয়ার্ড কাউকে দেননি তিনি। সরকারকে প্রশ্ন করার যে পোর্টাল রয়েছে, তার আইডি-পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। মহুয়া এদিন আরও বলেন, "সমস্যাটা হল, বিজেপি ভাবে সবাই গাধা। সংসদে প্রশ্ন লিখে জমা দেওয়া যায়, আবার ওয়েবসাইটে আপলোডও করা যায়। সেখানে কোনও গোপন তথ্য থাকে না।  তথ্য জানার অধিকারে যা জানা যায়, এখানে.ও সেই তথ্যই মেলে। কোনও সাংসদই নিজের হাতে এসব করেন না। সহযোগীরা করে দেন। একটি বেসরকারি সংস্থাও রয়েছে PRS. কয়েক মাস অন্তরই নতুন ছেলেমেয়ে পাঠায়। তারা কোথা থেকে আসে, কোথায় থাকে, কেউ জানে না। এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম নেই। বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। যেখানে বিরোধী সাংসদদের ফোন হ্য়াক হচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে তা করাচ্ছেন, সেখানে কে প্রশ্ন পাঠাল, সেটা বেশি জরুরি! আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আগেই বলেছি, ভুল মানুষকে ধরেছেন।"