ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: 'আপনারা বা আপনাদের লোক যে ওয়ার্ডে জেতেন সেখানে আমি হারি কী করে?'দলীয় কর্মীসভায় দুবরাজপুরের স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের প্রশ্ন শতাব্দী রায়ের।'তাহলে যে গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের ভোট করেন, সেটা আমার বেলায় হয় না?', স্থানীয় শাসক নেতাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের (Satabdi Roy)।


গত লোকসভা নির্বাচনে দুবরাজপুর পুরসভা এলাকা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন শতাব্দী রায়। তবে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবং পুরসভা নির্বাচনে শাসক দলই জয়ী হয়েছে। কেন এমনটা হবে সে প্রশ্ন তুলেই ‘খোঁচা দেন’ সাংসদ। শতাব্দী বলেন, 'আমি প্রত্যেকটা নির্বাচনে এসেছি। প্রত্যেকটা কাউন্সিলরের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে আমি বৈঠক করেছি। প্রত্যেক কাউন্সিলরের কাছে আমার প্রশ্ন, যদি আপনারা যদি জিততে পারেন, তাহলে আমার নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডগুলো হারে কী করে?'


শনিবার, দুবরাজপুর  পুর এলাকার একটি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন ও তার আগে একটি কর্মিসভা। শনিবার বিকেলে দুবরাজপুরে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে কার্যত শহর নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুললেন সাংসদ শতাব্দী রায়। প্রশ্ন তুললেন শহরের নেতাদের অন্তরিকতা নিয়েও। তৃণমূল সূত্রে দাবি, লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রার্থীর এমন আচরণে ক্ষুণ্ণ শহরের অনেক নেতাই। জেলার একমাত্র বিধানসভা যেটা বিজেপির দখলে।দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কার্যত অভিযোগ তুলে শতাব্দী যোগ করেন, 'আপনার নির্বাচন বা যখন আপনার স্ত্রী বা ভাই দাঁড়াচ্ছেন বা চাচা, চাচি দাঁড়াচ্ছেন তখন যে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন করছেন, তাহলে কেন সেটা আমার বেলায় হবে না? হচ্ছে না, কারণ গুরুত্ব দিয়ে সেটা করছেন না। এটা তথ্য বলছে।'


এ দিন বিকেলে দুবরাজপুরের ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত পুর সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন হয় সাংসদের হাতে। তার আগে লাগোয়া রবীন্দ্র সদনে আয়োজিত হয়েছিল কর্মিসভা। পুর এলাকার নেতা, কাউন্সিলর তো বটেই প্রচুর সংখ্যক মহিলা কর্মীও উপস্থিত প্রচুর সংখ্যক মহিলা কর্মীও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে শতাব্দী সরাসরি কার্যত নিশানা করেন শহরের নেতাদের।তিনি অভিযোগ করেন,  যে যে প্রস্তাব পাঠান, ক্ষমতায় থাকা বিষয়গুলি সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে দিই। আমি যখন ১০০ শতাংশ দিচ্ছি তখন আশা করতে পারি।' সভায় ভিড় থাকলেও তাঁদের উপস্থিতির উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শতাব্দী। বলেন, 'সাংগঠনিক বৈঠক বলে ধারণা ছিল। শুনতে খারাপ লাগছে বাচ্চাদের নিয়ে বিকেলে পার্কে বেড়াতে আসার মতো।'


আরও পড়ুন, 'টাকা ছিল না, গলার মটর মালার হার বিক্রি করে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম', বললেন মমতা


সাংসদ হিসেবে তিনি কী কী দিয়েছেন সে বিষয়ে কারও ধারণা আছে কি না সেই প্রশ্নও তোলেন বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ। বলেন, “আমি কী কাজ করেছি সেটা যদি বলতে না পারেন তাহলে ভোট চাইবেন কী করে?” কেন পুর এলাকার ৩৩টি বুথের মধ্যে মাত্র ১৩ জন উপস্থিত সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।