কলকাতা : আগামী ভোটযুদ্ধে নিজেকে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের এই দাবি ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গেছে। আজ কালীঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে, তাঁর সঙ্গে দেখা করেন কুণাল ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, ব্রাত্য বসু, তাপস রায় এবং নারায়ণ গোস্বামীর মতো নেতারা। সূত্রের খবর, বৈঠক চলে সাড়ে ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। প্রচারে নামার কথা বলা হলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তিনি শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রেই মনোনিবেশ করতে চান। দলের কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব বা নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে থাকতে চান না। এমনটাই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর।


কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি ? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি, যেভাবে ১০০ দিনের আন্দোলনকে মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে...যেভাবে প্রশাসনের একাংশের অসহযোগিতায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প মাথপথে থমকে রয়েছে এবং তাতে তিনি অসন্তুষ্ট। অভিযোগ উঠেছে, দলের অন্দরে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। তাই অভিষেক নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি। তবে বাইরে এই ব্যাপারে মুখ খোলেননি কোনও নেতাই।


ডায়মন্ড হারবার ছাড়া কি তাহলে কোথাও প্রচারে যাবেন না অভিষেক ?


এনিয়ে পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, "কোথা দিয়ে মিটিংয়ে কী খবর পেয়েছেন জানি না। বৈঠক-মিটিং একদমই বাজে কথা। যাঁরা বলছেন তাঁরা ঠিক বলছেন না। অনেকেরই বক্তব্য আছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ারের মতো আরও কিছু কর্মসূচি করা উচিত। যেটার মাধ্যমে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা প্রচার করেছিলেন। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এটাই অনুরোধ করছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের বার্তাটা মানুষ আপনার মুখ থেকে শুনতে চান। আপনি আবার নবজোয়ারের মতো একটা কিছু করুন। আবার আপনি রাস্তায় বেরোন। আমরা অনুরোধ করেছি। আমি অনুরোধ করেছি মানেই উনি সম্মতি দেবেন এমন কোনও মানে আছে ? উনি ডায়মন্ড হারবার ছাড়া কোথাও যাবেন না এ ধরনের কোনও কথা হয়নি। আমরা বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা মানুষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে শুনতে চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কত পরিশ্রম করবেন ? একজন ভদ্রমহিলা সারাদিন ধরে মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন। তার পরেও সংগঠনের ব্যাপারে যদি একটা মানুষকে এত খুঁটিনাটি খবর রাখতে হয়, তাঁকেই যদি আবার রাস্তায় নেমে প্রচার করতে হয়, তাঁকেই যদি আবার সরকার চালাতে হয়, তাহলে তাঁকে তো ভগবানের থেকেও উপরে কিছু হতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথায়। তাঁর একজন প্রচারক দরকার। সেই প্রচারকের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যে নবজোয়ারের জন্য রাস্তায় থাকা, এটা কি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সম্ভব ? তাহলে রাজ্য চালাবে কে ? সরকার চালাবে কে ? তাহলে আবার রাস্তাতেও কারও থাকার দরকার আছে।" 


এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন, "২০২৩ শেষ হতে চলেছে। আসছে ২০২৪। বাইরে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরেছেন। সৌজন্যমূলক দেখা হল। কথা হল। এই আর কী !"