দীপক ঘোষ, ঋত্বিক প্রধান ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: ট্রেন বাতিল করেও আটকাতে পারলেন না। বাংলার প্রাপ্য টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে মোদি সরকার ও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও 'কেউ টাকা আটকায়নি, হিসেব চাওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশের লাঠির সাইজ ৬ ফুট। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তলব করেছে ইডি।এদিকে ওই দিনই তৃণমূলের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি। মূলত কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্নার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ করেও পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত বাংলার শ্রমিকরাও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন তিনি দিল্লিতে দলের ধর্না কর্মসূচিতে থাকবেন। আগেই  অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন,  যতদিন না বাংলার মানুষ প্রাপ্য় টাকা না পাবে ততদিন আন্দোলন চলবে। আর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন,আমি ফের বলছি, পারলে আমাকে আটকে দেখাও। আমি কোনও তদন্তকারী এজেন্সিকে চ্যালেঞ্জ করছি না। আমার যা বলার ছিল, বলেছি। দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়েও ফের এই চ্যালেঞ্জ করছি।'


বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। চূড়ান্ত টানাপোড়েনের পরে, শেষমেশ জবকার্ড হোল্ডারদের বাসে করে দিল্লি পাঠানো হয়েছে। সেই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে, দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে,বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বলেন, বিজেপির এত ভয় কীসের ট্রেন বাতিল করছে? সারা দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে যাতে তৃণমূল আন্দোলন করতে না পারে। ১ হাজার নরেন্দ্র মোদি রাস্তায় নামলেও এই আন্দোলনকে আটকাতে পারবে না। আপনি এত চেষ্টা করলেন দিল্লির আন্দোলন আটকাতে পারলেন? আপনি এত চেষ্টা করলেন ট্রেন বাতিল করে পারলেন আটকাতে? পারলেন না। 'প্রাপ্য টাকা না মেলা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন'মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।


অপরদিকে শুভেন্দু অধিকারী নাম না করেই  তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, 'যন্তর মন্তরে যা খুশি করুন, এপাং, ওপাং ঝপাং, আমরা সবাই কোলা ব্যাঙ, যন্তর মন্তরের বাইরে কিছু করতে যান, ওখানে কিন্তু বিনীত গোয়েল নেই, অমিত শাহের পুলিশ, লাঠির সাইজ ৬ ফুট।' উল্লেখ্য ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগে, ২ অক্টোবর, সোমবার গান্ধী জয়ন্তীতে রাজঘাটে, ধর্না দেবেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।পরদিন ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার যন্তর-মন্তরে মূল বিক্ষোভ-অবস্থান,এবং সেখান থেকে কৃষি ভবন অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। বিজেপি যখন পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে অস্ত্র করে কাউন্টার-অ্যাটাকের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন পাল্টা বিজেপি শাসিত অসমে ১০০ দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক।


আরও পড়ুন, UP ঢুকতেই দিল্লিগামী TMC-র বাসের ভিডিওগ্রাফি, প্রশ্নের মুখে পুলিশের উর্দিধারী ২


সম্প্রতি অভিষেক বলেছিলেন, অসমে দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের টাকা নিয়ে। অসমের টাকা বন্ধ করেছে? যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে তদন্ত হওয়া উচিত। তা বলে মানুষের টাকা বন্ধ থাকা উচিত নয়। এটা আইন। কথায় কথায় বলছেন মোদিজি টাকা পাঠিয়েছে। এই টাকা কারওর পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। কেন্দ্র ১ লক্ষ কোটি টাকা তুলে নিয়ে যায়। ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বাংলার প্রাপ্য়। যত ধমকাবেন, যত চমকাবেন তত আন্দোলন তীব্রতর হবে। ক্ষমতা থাকলে আপনি আটকান।' পাল্টা শমীক ভট্টাচার্য বলেন,ওরা তো সর্বভারতীয় দল, এটা নিয়ে আন্দোলন করা উচিত, কেন দু-জায়গায় দুরকম নিয়ম ? প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র। এদিকে হুঁশিয়ারি, পাল্টা হুঁশিয়ারির আবহেই চড়ছে রাজনীতির উত্তাপ! সোমবার গান্ধীজয়ন্তীতে দিল্লির রাজঘাটে তৃণমূলের ধর্না। সেই কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।