বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত ভোটের আগে শুভেনদু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) জেলায় কমিটি গঠন ঘিরে তৃণমূলে (TMC)  অসন্তোষ চলছেই। এবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতির অপসারণ চেয়ে, তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মিছিল হল পাঁশকুড়ার (Panskura) মাইশোরায়। দলের কেউ নয়, মিছিল করেছেন শুভেন্দু অধিকারীর দালালরা। পাল্টা কটাক্ষ তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতির। 


কী ঘটল?
বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, মাইশোরা অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীদের বাদ দিয়ে কেন অঞ্চল কমিটি গঠন করা হল, তারই প্রতিবাদে এই ঐক্য জবাব মিছিল তালে তালে চলবে। বিক্ষোভকারীদের আরও প্রশ্ন, মাইশোরা ফুটবল গ্রাউন্ডের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন, অপদার্থ সুজিত রায় জবাব চাই, জবাব দাও। তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে তৃণমূলেরই ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে মিছিল! পঞ্চায়েত ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় কমিটি গঠন ঘিরে শাসকের ঘরে কোন্দল চলছেই। পাঁশকুড়ার নতুন ব্লক কমিটি নিয়ে অসন্তোষের জেরে, বুধবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ।
খোদ ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা! তার রেশ না কাটতেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত রায়ের পদত্যাগের দাবিতে দলীয় পতাকা নিয়ে মিছিল দেখা গেল পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকায়! মিছিলে নেতৃত্ব দেন নিহত তৃণমূল নেতা কুরবান আলি শাহর দাদা আফজল আলি শাহ। তাঁদের অভিযোগ, যারা একসময় বিজেপির হয়ে কাজ করেছিল, তৃণমূলের নতুন ব্লক কমিটিতে তাদেরই পদ দেওয়া হয়েছে। উপেক্ষা করা হয়েছে, নিহত তৃণমূল নেতার অনুগামীদের। আফজল আলি শাহের অভিযোগ, 'একএকজন ২৫-৩০ টা করে কেস খেয়েছে। কত রকম অন্যায় হয়েছে। ১৫-২০ বছর পার্টি করছে। এখন যে অঞ্চল ও ব্লক কমিটি করা হয়েছে, তাতে একজনকেও স্থান দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে পথসভা ও মিছিল করলাম।' পাঁশকুড়া তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সুজিত রায় অবশ্য বললেন, 'তৃণমূল কর্মীদের মিছিল বের করার কথা না। তারা জেলা সভাপতি, রাজ্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে জানাবে। শুভেন্দুর যদি কেউ দালাল থাকে, তৃণমূলের জামা পরে, তারা মিটিং মিছিল করবে। তার আদৌ তৃণমূলের কর্মী নয়, শুভেন্দুর দালাল।' পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় কটাক্ষের সুর শোনা গেছে বিজেপির গলায়। 


বিজেপির কটাক্ষ...
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়ক বলেন, 'পদ পাওয়ার মধ্যে দিয়ে দলের সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি নয়, পদ পাওয়ার মধ্যে দিয়ে জনসেবা নয়, যে যে রকম পদ পাবে, সে সরকম কাটমানি তার পকেটে ঢোকাতে পারবে। তাই তৃণমূলে পদ পাওয়ার লড়াই শুরু হয়েছে। পশ্চিম পাঁশকুড়া বিধানসভায় সেই সার্কাসই চলছে।' পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। তাদের তমলুক সাংগঠিনক জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, 'যারা এটা করেছে, তারা ঠিক কাজ করেনি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দলে জানানো উচিত। এমন কিছু করা উিত না, যাতে দলের ক্ষতি হয়। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। বিজেপি বিরোধী দল। তারা এধরনের কথা বলবেই।' সবমিলিয়ে পাঁশকুড়ায় তৃণমূলের ব্লক কমিটি ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও তীব্র চেহারা নিল।


আরও পড়ুন:২৫ এপ্রিল থেকে ২৫ জুন, টানা ২ মাস জেলাতেই অভিষেক, ভোটটা কবে?