কলকাতা: বামেদের দ্বারা বিতাড়িত নেতাকে ফের রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল। রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে মনোনীত করল তৃণমূল। পাঁচ বছর পর ফের সিপিএমের বহিষ্কৃত নেতাকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে জোড়াফুল শিবির। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত। জহর সরকারের ছেড়ে যাওয়া আসনে উপনির্বাচন, ঋতব্রতকে প্রার্থী করল তৃণমূল। শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা করেছে তারা। (Ritabrata Banerjee)
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন জহর সরকার। তাঁর ছেড়ে যাওয়া জায়গায় ঋতব্রতকেই পছন্দ তৃণমূলের। সেই মতো রাজ্যসভা উপনির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হল। পাটিগণিতের হিসেবে ঋতব্রতর জয় একরকম নিশ্চিত। আগামী ২০ ডিসেম্বর রাজ্যসভার উপনির্বাচন। অনৈতিক কাজের অভিযোগে ২০১৭ সালে ঋতব্রতকে বহিষ্কার করে সিপিএম। (Ritabrata Banerjee)
এক সময় বামেদের সাংসদ হিসেবেও রাজ্যসভায় জায়গা পান ঋতব্রত। শোনা যেত, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের 'ব্লু আইড বয়' ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৭ সালে সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। দল থেকে বিতাড়িত হলেও, ২০২০ সাল পর্যন্তও সাংসদ ছিলেন ঋতব্রত। ২০২০ সালেই তৃণমূলে যোগ দেন। সেই থেকে জোড়াফুল শিবিরের শ্রমিক সংগঠন এবং উত্তরবঙ্গে কাজ করতেন। তাঁকেই এবার পুরস্কৃত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন ঋতব্রতর মনোনয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্বীকৃতির যোগ্য। দলে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সংগঠনকে মজবুত করেছেন। সময় লাগলেও নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার পাওয়া যায়'।
তৃণমূল রাজ্যসভায় তাঁকে মনোনীত করার পর এবিপি আনন্তে প্রতিক্রিয়া জানান ঋতব্রত। বলেন, "আমাদের সর্বময়ী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে একটা কথাই বলতে চাই, 'তব চরণে নত মাথা'। উনি যে সুযোগ আমাকে দিয়েছেন, নিশ্চিত ভাবে দায়িত্ব পালন করতে চেষ্টা করব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানাই।" বাম আমলের পর তৃণমূল জমানাতেও রাজ্যসভার সাংসদ? ঋতব্রত বলেন, "পারফর্ম্যান্স কথা বলে। আগে যখন সাংসদ ছিলাম, নামের পাশে PRS লিখলে, পারফর্ম্যান্স দেখতে পাবেন। আগে ছ'বছর সাংসদ ছিলাম। কত তর্কে অংশ নিয়েছি, কত প্রশ্ন করেছি, তা সকলের সামনে রয়েছে। আমি সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করব।"
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, "ঋতব্রত আদর্শ সাংসদ। রাজ্যসভায় অত্যন্ত ভাল পারফর্ম্যান্স ছিল। তৃণমূলেও দক্ষতার সঙ্গে সাংগঠনিক কাজকর্ম ভালভাবে করেছে। যোগ্য প্রার্থী হিসেবেই ঋতব্রতর নাম চূড়ান্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
ঋতব্রতর মনোনয়নে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূল প্রমাণ করল যে, দুর্নীতিগ্রস্ত লোক, যাদের অন্য দল বিতাড়ন করে, তারাই তাদের সম্পদ। আর কোন জায়গা দিলেন, না জহর সরকারের! এর মধ্যে দিয়েই তৃণমূলের আদর্শ, রাজনীতির মধ্যে লাইন টানা যায়।" রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য যদিও এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর মতে, তৃণমূল কাকে মনোনীত করবে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে রাজ্য থেকে একজন রাজ্যসভায় যাচ্ছেন, তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শমীক।