কলকাতা : পুজোর মুখে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে, আগের রায়ই বহাল রাখলেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের রায় নিয়ে সরকার কোন পথে হাঁটবে এই নিয়ে কুণাল ঘোষ, তাপস রায়ের মতো তৃণমূল নেতারা মাপা প্রতিক্রিয়া দিলেও তাঁর হতাশা উগরে দিয়েছেন সৌগত রায় (Sougata Roy)। তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সাংসদের সাফ কথা, 'এর পর রাজ্য সরকারের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় খোলা থাকবে না।' হাইকোর্টের রায়ের পাশাপাশি বিরোধীদেরও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন তিনি।


'হাইকোর্টই সমস্ত জ্ঞানের আধার, এমনটা মনে করি না'


ডিএ মামলা নিয়ে হাইকোর্টে ধাক্কা প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেছেন, 'এই সিদ্ধান্তে খুবই দুঃখিত। রাজ্যের সত্যিই আর্থিক সমস্যা রয়েছে, সেজন্যই তো রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছিল। ব্যাপারটা এমন মোটেই নয় যে রাজ্য সরকার কর্মচারীদের ডিএ দিতে চায় না।- এর পর আর রাজ্য সরকারের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া ছাড়া কোনও পথ খোলা থাকবে না। হাইকোর্ট তাদের মতো রায় দিয়েছে, তবে হাইকোর্টই সমস্ত জ্ঞানের আধার, এমনটা মনে করি না। আর বিরোধীরা যে বলে খেলা-মেলায় টাকা যাচ্ছে, তাতে আর কত টাকা যায়? পুজোয় ২৫০ কোটি মতো অনুদান দেওয়া হয়েছে, আর মেলা-খেলায় তো অল্প টাকায় খরচ। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের ডিএ দেওয়া অনেক টাকার ব্যাপার। বিরোধীরা কিছু বোঝেন না, তাই এসব বলছেন।'


'দলের কোনও বক্তব্য এখনই নেই'


সাংসদ সৌগত রায় কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেও হাইকোর্টের রায় নিয়ে সেভাবে কিছু না বলে বরং বিরোধীদের নিশানা শানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের মুখপাত্র বলেছেন, 'গোটা বিষয়টা এই মুহূর্তে প্রশাসনিক ও সরকারি বিষয়। দলের তরফে এই মুহূর্তে কিছু বলছি না। তবে যারা বেশি কথা বলছেন, তারাই তো রাজ্যের টাকা আটকে রেখেছে। বিজেপি বলছে ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রের হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দেবে, যদিও কেন্দ্রীয় সরকারই বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের টাকা আটকে রাখায় রাজ্যের উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে।' এদিকে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেছেন, 'আদালত তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। গোটা বিষয়টা বিচারাধীন, রাজ্য সরকার কোন পথে এগোবে, তা ঠিক করবে।'



সুকান্ত-র খোঁচা


ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার খেলা-মেলা করবেন ভাল কথা। কোনও আপত্তি নেই।  কিন্তু যাঁরা ডিএ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেকার যুবকরা কর্মসংস্থান পাচ্ছেন না। যাঁরা পাচ্ছেন না, তাঁদের ডিএ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে ৩০ শতাংশ ফারাক হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারকে এটা বিবেচনা করা উচিত। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া উচিত। ডিএ বাড়লে শুধু সরকারি কর্মীদের উপকার হয় তাই নয়। ওই টাকা অর্থনীতিতে ঢোকে, অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন তাঁদেরও উপকার হয়। অর্থনীতিবিদেরা তাই বলেন।' সুকান্ত আরও বলেন, 'আমাদের ম্যানিফেস্টোতে তা ঘোষণা করেছিলাম। রাজ্যে বিজেপি সরকার এলে আমরা কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দেব। রাজ্যের সমস্ত সরকারি অশিক্ষক-শিক্ষক কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দেব।'


আরও পড়ুন- রাজ্য সরকারি কর্মীদের বড় জয়, ডিএ মামলায় রাজ্যের পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ হাইকোর্টের