আশাবুল হোসেন, কলকাতা: দলের অন্তর্কলহ নিত্য দিন প্রকাশ্যে চলে আসছে। সেই নিয়ে এবার কড়া বার্তা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন সামনে। তার আগে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্ক করে দিলেন সকলকে। মমতা জানিয়েছেনব, এবার থেকে যা বলার দলের অন্দরেই বলতে হবে। কোনও প্রশ্ন থাকলে, বাইরে মুখ খোলা যাবে না। প্রকাশ্যে মুখ খুললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছেঁটে ফেলা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। (Mamata Banerjee)
নবীন-প্রবীণ বিতর্কের আবহে বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সাংগঠনিক বৈঠক ছিল তৃণমূলের। কালীঘাটের সেই বৈঠকেই দলের শৃঙ্খলারক্ষায় কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা। স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও বিষয়ে, কারও কোনও প্রশ্ন থাকলে, দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র রয়েছে, দলের অন্দরে সেই নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই দলের বাইরে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলা যাবে না। কোনও বিতর্ক বাধানো যাবে না। এতে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়। (TMC News) শৃঙ্খলাই শেষ কথা বলে জানিয়েছেন মমতা।
এদিন মমতা বৈঠকে জানান, এর পরও যদি কেউ দলবিরোধী কাজ করেন, প্রকাশ্যে মুখ খোলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাঁকে ছেঁটেও ফেলা হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি যে কড়া মনোভাব নিয়ে এগোচ্ছেন, তা-ও এদিন জানিয়ে দেন মমতা। শুধু তাই নয়, দলের রাজ্যস্তরের কয়েক জন মুখপাত্রের ভূমিকায় অসন্তোষের কথাও উঠে এসেছে বৈঠকে। কয়েক জনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন মমতা। কয়েক জনকে বাদ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন। কাদের নতুন করে নিয়োগ করা হবে, আলোচনার পর এ নিয়ে সুব্রত বক্সি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে এদিন মানস ভুঁইয়ার মুখেও একই কথা শোনা যায়। তিনি বলেন, "বুথ, পাড়া, গ্রাম, শহরের সব নেতাকে ঐক্যবদ্ধ হতে বার্তা দিয়েছেন নেত্রী। আন্দোলনের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন। পরিষ্কার জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু তা দলের অন্দরেই আলোচনা করতে হবে না। দলের বাইরে কথা বলা যাবে না, যাবে না, যাবে না। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলাকে, বাংলার মানুষকে আমরা রক্ষা করব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যাযের সেনাপতিত্বে। হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব।"
অভিষেককে এদিন নতুন একটি দায়িত্বও দেন মমতা। জানানো হয়, একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হবে দলের তরফে, যাতে সরকার মানুষের জন্য কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করছে, তার খতিয়ান থাকবে। এ নিয়ে যদিও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "মমতা কাকে ছেঁটে ফেলবেন আর কাকে ছাঁটবেন না, সেটা তাঁর দলের অভ্য়ন্তরীণ বিষয়। সংবাদমাধ্যমে এসব আনার অর্থহীন। মানুষের উৎসাহ নেই। আগেই এমন কথা বলেছিলেন। আগে ছেঁটে ফেললে তাঁর দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি আজ এমন হতো না।"