কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ। ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের নিয়ে দিল্লি রওনা দিচ্ছে তৃণমূল। শনিবার বিশেষ ট্রেনে করে বাংলা থেকে শ্রমিকদের দিল্লি নিয়ে রওনা দেওয়ার কথা। তার জন্য শুক্রবার থেকেই জেলা থেকে কলকাতায় আসতে শুরু করবেন ১০০ দিনের কাজে বঞ্চিত শ্রমিকরা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। (TMC Protests in Delhi)
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে দিল্লিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনা, রাজ্য সরকারের প্রাপ্য বকেয়া আটকে রাখার অভিযোগ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। তার জন্য কাজ করে টাকা না পাওয়া শ্রমিকদেরও দিল্লি নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। ৩০ সেপ্টেম্বর বিশেষ ট্রেনে চেপে রওনা। ১ অক্টোবর দিল্লি পৌঁছনোর কথা। (Kolkata News)
তৃণমূল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বঞ্চিতদের কাছ থেকে চিঠি সংগ্রহের কাজ মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। এখনও চিঠি সংগ্রহের কাজ চলছে। মোট ৫০ লক্ষ চিঠি ট্রাকে চাপিয়ে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার কথা। আগামী ২ এবং ৩ অক্টোবর আন্দোলন কর্মসূচি চলবে দিল্লিতে। ২ অক্টোবর গাঁধী জয়ন্তীতে প্রার্থনাও হবে। তার পর ৩ অক্টোবর যন্তর মন্তরে অবস্থান কর্মসূচি এবং তার পর দিল্লির কৃষিভবনের উদ্দেশে হবে অভিযান। সেই অভিযানে কিছু চিঠি থাকবে। বাকি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং কেন্দ্রীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: CV Ananda Bose : রাজভবনের নালিশের পরই পুলিশকে সরানোর নির্দেশ, নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে সিআরপিএফ
তৃণমূলের সব স্তরের নেতা-নেত্রীদের এই আন্দোলনে যোগ দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরাও থাকবেন। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়েরও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পায়ে চোট লাগায় আপাতত হাঁটাচলা বন্ধ। তাঁর যাওয়া অনিশ্চিত। তৃণমূলের লক্ষ্য হল, এই দাবি আদায়কে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে আন্দোলনের ঝড় তোলা যায়। সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ পোস্টও চোখে পড়েছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হ্যান্ডলে।
এ নিয়ে যদিও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, "দেখুন কোথা থেকে দিল্লি নিয়ে যাবে লোক! দিন প্রতি ৫০০ টাকা করে দিয়ে গোয়া নিয়ে গিয়েছিল। এখন হয়ত দর বাড়াবে। ৫০০ থেকে ৭০০ হবে। আমাদের আপত্তি নেই, কারণ দিল্লিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর নামে যদি কিছু লোকের রোজগারের ব্যবস্থা হয়, আমার আপনার হিংসে করার কী আছে। এমনিই চাকরি নেই এখানে। অন্তত তৃণমূলের হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে ভাত জুটবে পেটের।"
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হলেও, রাজ্য সরকারের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেন, "কেন্দ্রের বঞ্চনা বন্ধ হওয়া উচিত। কেন্দ্র যদি রাজ্যকে টাকা দেয়, তার হিসেবও জমা দেওয়া উচিত। দু'টোই প্রয়োজন।" সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চবার অভিযোগ নিয়ে তপ্ত রাজনীতি। এবার দিল্লিতেও তার আঁচ পড়তে চলেছে।