ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : জনসংযোগে তৃণমূলের (TMC) নতুন হাতিয়ার 'নবজোয়ার রেডিও'। তৃণমূল কংগ্রেসের ফেসবুক পেজে শোনা যাবে নেতা-নেত্রীদের কথা। পডকাস্টের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছতেই নতুন উদ্যোগ বলে দাবি তৃণমূলের।
কিন্তু, কী কারণে এই ভাবনা ? তৃণমূল সূত্রের খবর, বহু মানুষের কাছে টিভি নেই। সব স্তরে নবজোয়ারের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই নবজোয়ার রেডিও শুরু করা হয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ থেকে ২ মাস ব্যাপী 'তৃণমূলে নব জোয়ার' কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগে শান দিতে ২ মাস ব্যাপী নবজোয়ার যাত্রায় বেরিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের কর্মসূচিতে অভিষেক মন্তব্য করেন, "দলের বেনোজল বৃত্তের বাইরে বের করে যোগ্যদের আনতেই এই নবজোয়ার।"
গত পরশু অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কনভয়ের যাত্রাপথেই আছড়ে পড়ে কুড়মিদের ক্ষোভ ! ইটবৃষ্টি, মন্ত্রীর গাড়িতে ভাঙচুর চলে। তৃণমূলকর্মীদের মারধর করা হয়। ছুড়ে মারা হয় তৃণমূলের পতাকা। ওঠে চোর চোর স্লোগান।
শুক্রবার সন্ধেয় কুড়মি বিক্ষোভে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি পেরিয়ে যেতেই শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পাল্টা সুর চড়িয়ে অভিষেক বলেন, 'খেলা তুমি শুরু করছো, শেষ আমি করব। সুকান্তর কথায় বলি, আদিম হিংস্র মানবিকতার আমি যদি কেউ হই...।'
বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই গড় শালবনিতে জমায়েত করছিলেন কুড়মিরা। বিকেলের দিকে মিনিট ৪০ রাস্তা অরবোধও করা হয়। সন্ধেয়, দহিজুড়ির কর্মসূচি শেষ করে লোধাশুলির দিকে আসছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন, ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের উপর গড় শালবনিতে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিষেকের গাড়ি চলে যেতেই শুরু হয় মুহুর্মুহু ইটবৃষ্টি। মারধর করা হয় তৃণমূল কর্মীদের। বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। আহত হন ঝাড়গ্রাম থানার আইসি-সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'গাড়ির পর গাড়ি থেঁতলে দিয়েছে, কোনও অভিযোগ থাকলে, শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলুন। রাজ্যের মন্ত্রীকে ইট ছুড়ে মারছেন। তৃণমূল কর্মীরা বাইকে করে যাচ্ছে, গলায় গামছা দিয়ে টেনা নামাচ্ছে। এ কী আন্দোলন ?' তৃণমূল সূত্রে দাবি, ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কী হয়েছে তা বিষদে জানান তিনি।
এদিকে অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় ধৃত কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো-সহ ৪ জনের আজ জেল হেফাজত হয়েছে। ১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ঝাড়গ্রাম আদালত। কাল রাজেশ-সহ ৪ জনকে ফের আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, চুরি ছাড়াও একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এর আগে পেশায় শিক্ষক কুড়মি নেতাকে কোচবিহারে বদলি করা হয়। খড়গপুর থেকে কোচবিহারে কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতোকে বদলি করা হয়। খড়গপুরের বানাপুর স্কুল থেকে কোচবিহারের চামটা আদর্শ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।