শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : বিজেপির নবান্ন অভিযানে  (BJP Nabanna Abhijan) ধুন্ধুমার গঙ্গার দু’পাড়। ফাটে বিজেপি কর্মীর মাথা। লালবাজারের অদূরে দাউ দাউ করে জ্বলল পুলিশের গাড়ি। আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীরাও (Police)। রাজ্যের রাজনীতিতে যেদিন আবর্তিত হল বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে, সেদিনই গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ শানালেন উদয়ন গুহ। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী হুমকি সুরে বলেন, 'হাতে চুড়ি পরে বসে নেই। ওরা একটা মারলে, আমরা দুটো মারব, একথা যেন মনে রাখে। '


উদয়নের হুমকি


'আমাদের ছেলেদের মারলে আমি চুপ করে বসে থাকব না, হাতে চুড়ি পরে বসে নেই। ওরা একটা মারলে, আমরা দুটো মারব, একথা যেন মনে রাখে।' শীতলকুচিতে তৃণমূলের সভা থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী (North Bengal Development Minister) ও দিনহাটার তৃণমূল (MLA) বিধায়ক উদয়ন গুহ।


গত রবিবার শীতলকুচিতে বিজেপির মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তোলে তৃণমূল। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শীতলকুচিতে প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। সেখানে সভায় বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন উদয়ন গুহ।


রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে সরব


কিছুদিন আগে কোচবিহারের সভা থেকে রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি বলেছিলেন, 'কেউ বলছেন দার্জিলিং আলাদা চাই, কেউ বলছে উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য চাই, কেউ বলছে কামতাপুর রাজ্য চাই, কেউ বলছেন কেন্দ্র শাসিত কুচবিহার চাই, কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান, কেউ স্বপ্ন দেখছেন কুচবিহারের রাজা হতে চান, এদের স্বপ্ন ভঙ্গ করে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে কুচবিহারের সাধারণ মানুষকে, আমরা রাস্তায় নেমে এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব, রক্ত ঝরিয়ে কোচবিহারের সাধারণ মানুষকে। রক্ত ঝরিয়ে আগামীদিনে বাংলা ভাগ রুখব।' যার পরই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে হুমকি পোস্ট দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও ফেসবুকে পোস্টের কথা অস্বীকার করেছে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন নেতৃত্ব।


উদয়নের দায়িত্ববৃদ্ধি


সাম্প্রতিক রদবদলে মমতা বন্দ্যপাধ্যায়েরর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন উদয়ন গুহ। কোচবিহারের দিনহাটার তৃণমূল বিধায়কের গুরুত্ব বৃদ্ধিতে, রাজনৈতিক মহলে এই জল্পনা জোরদার হয়েছে। উদয়ন নিজেও বলছেন, মন্ত্রিত্বের গুরুদায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গে সংগঠনের কাজেও তাঁর নজর থাকবে।  পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ৮টি আসনের মধ্যে একটিও জিততে পারেনি তৃণমূল। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিংয়ে প্রাধান্য ছিল বিজেপিরই। উত্তরবঙ্গের মোট ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টিতেই জয়লাভ করেছিল বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছিল ২৩টি। এবার বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই ঘর গোছাতে চাইছে শাসকদল। বিশেষ নজর কোচবিহারে। 


আরও পড়ুন- জুন-শ্রীকান্ত হ্যান্ডশেক, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মিটল বিবাদ