কলকাতা: অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন আগেও। এ বারও তাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন পরিবার, পরিজন, আত্মীয়-স্বজনরা। কিন্তু সব আশাকে হতাশায় বদলে রবিবার চলে গেলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া টলিউডে। তা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। ঐন্দ্রিলার এ ভাবে চলে যাওয়া, মেনে নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০ দিনের লড়াই শেষে রবিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ঐন্দ্রিলা
ঐন্দ্রিলার মৃত্যুতে এ দিন এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন অপরাজিতা। তিনি বলেন, যখন ক্যান্সার হয়েছিল, এমসে ভর্তি ছিল, নিয়মিত ওকে ফলো করতাম। একটি পার্টিতে দেখা হল। ও অপাদি বলে এসে জড়িয়ে ধরল। ওকে বলেছিলাম, পুরস্কার পেয়ে তত আনন্দ হয়নি, যতটা ওকে দেখে হয়েছিল। ও কাজ করছিল, মহালয়ায় নাচল। ফিরে এসে এ ভাবে কাজ করতে দেখে খুব খুশি হয়েছিলাম।"
অপরাজিতা আরও বলেন, "ওর স্ট্রোক হয়েছে শুনে তাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তবে অসম্ভব জীবনীশক্তি ছিল। আগেও দু'বার জিতেছে। তাই মনে হয়েছিল, এতটুকু বাচ্চা মেয়ের কী হবে? কত বয়স্করা ফিরে আসছেন! পুজোয় বসলেই ওর মুখটা ভেসে ওঠে। রোজ খোঁজ নিই ওঁর। রাতে ১০ বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে জেনে আজ সকালেও খোঁজ নিই। এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলচিলাম। তখনই শুনতে পেলাম, পিছন থেকে কেউ বলছে ঐন্দ্রিলা আর নেই।"
ঐন্দ্রিলার প্রয়াণে মুখ খুললেন অপরাজিতা
ঐন্দ্রিলার এ ভাবে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে অপরাজিতার বক্তব্য, "আমি যে কী বলব! অদ্ভূত লাগছে। একদম ভাল লাগছে না আমার। আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী। মিরাকলে বিশ্বাস করি না। ওর এত পজিটিভ ভাইব! হাসলে মনে হয়, গোটা পৃথিবী হাসছে। ওর মা, বাবা, ওই ছেলেটি, আমি জানি কাছের মানুষ চলে গেলে কী হয়। কী নিয়ে বাঁচবেন ওঁরা? খুব খারাপ হল এটা। ঠিক হল না।"
২০১৫ সালে অস্থিমজ্জার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা শর্মা। দিল্লিতে দীর্ঘদিন তাঁর কেমো থেরাপি চলে। তবে ক্যান্সারকে হারিয়ে ২০১৬-য় বাড়িতে ফেরেন তিনি। তারপর জীবনের ছন্দে ফিরেছিলেন ধীরে ধীরে। পা রাখেন অভিনয় জীবনেও। তারপর তাঁর প্রতিভার উড়ান নজর কাড়ে সকলের। কিন্তু ছন্দপতন হল ২০২১-এ। তাঁর ডান ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ল। আবার শুরু হল কেমো থেরাপি। সেই যুদ্ধও হাসি মুখেই জয় করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। তার পর আবার ফিরেছিলেন অভিনয় জীবনে। কিন্তু এ মাসেই শুরুতেই সব ওলটপালট হয়ে গেল চিরদিনের জন্য।