কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: খনিগর্ভে ধস নামায় কয়েকজনের চাপা পড়ার আশঙ্কা। রানিগঞ্জের (Raniganj Open Pit Mine Tragedy) নারায়ণকুড়িতে ইসিএলের খোলামুখ খনি (ECL Open Pit Coal Mine Tragedy) থেকে কয়লা চুরি করতে গিয়েই এই বিপত্তি, মনে করছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত ৭ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, করলেন দাবি আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (BJP MLA Agnimitra Paul)। যদিও পুলিশের বক্তব্য, ৩ জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ইসিএলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 


কী জানা গেল? 
বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য, স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করেছেন। রাতে কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে খনির সামনে বিক্ষোভ দেখান অগ্নিমিত্রা পাল। বেশ কিছুক্ষণ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধও করা হয়। অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য, 'গরিব মানুষকে পেট চালাতে হবে। তিনি তাই সেখানে কয়লা তুলতে গিয়েছেন। কিন্ত পুলিশ, প্রশাসন, ইসিএলের আধিকারিকদের তো দেখার কথা ছিল। তাঁদের এটা নজরে রাখা উচিত ছিল যে, এই দরিদ্র মানুষগুলি এত ঝুঁকি নিয়ে খনির ভিতরে ঢুকছেন। তাঁদের কোনও হেলমেট, গিয়ার নেই। চোখের সামনে সবটা দেখছে সকলে।' বিজেপি বিধায়কের আরও মতে, গত কাল রাতে ৭টি দেহ পাওয়া গিয়েছে। হয়তো আরও কিছু দেহ ভিতরে চাপা পড়ে থাকতে পারে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী কিছু করেনি। স্থানীয় মানুষরাই দেহগুলি বের করেছেন। একধাপ সুর চড়িয়ে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়কের আরও দাবি, হেন কোনও বেআইনি কাজ নেই যেখান থেকে পুলিশ টাকা খায় না, কলকাতার 'শান্তিনিকেতন' এবং কালীঘাটে টাকা যায় না।  


দেহের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা...
ইসিএলের যে খোলামুখ খনিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে কয়লা উত্তোলন করতে বেসরকারি সংস্থাকে ভার দেওয়া হয়েছে। সাধারণত, এক ভাগে কয়লা তোলা হয়ে গেলে অন্য ভাগে কয়লা তোলার কাজ শুরু হয়। সংস্থাটির বক্তব্য, যে অংশে কয়লা উত্তোলন হয়ে গিয়েছিল সে অংশেই একেবারে সমান্তরাল ভাবে rat hole করে কয়লা তুলতেন স্থানীয় কয়েকজন। গত কাল, অর্থাৎ বুধবারও তাঁরা কয়লা তুলছিলেন। বেলা তিনটে-সাড়ে তিনটে তখন। হঠাৎ খনিতে ধস নামে। চাপা পড়ে যান বেশ কয়েকজন। খবর পেতেই পৌঁছে যান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ছুটে আসেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক। তখনও পর্যন্ত উদ্ধারের কোনও কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ বিধায়কের। তার পরই বিক্ষোভ শুরু হয়। শেষমেশ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দল পৌঁছলেও তারা কোনও কাজ করেনি বলে অভিযোগ। আখেরে দেহ উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রাই।  


আরও পড়ুন:অন্যায্য দাবিতে অশান্তি, পড়ুয়াদের বিরুদ্ধেই এবার রাতভর ধর্নায় যাদবপুরের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার