কলকাতা: রাজ্যের (West Bengal) নদী-ভাঙন নিয়ে কি দল বেঁধে কেন্দ্রের কাছে দরবার করবে তৃণমূল-বিজেপি? মঙ্গলবার বিধানসভায় এই মর্মে প্রস্তাব পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা উন্নয়নের স্বার্থে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও, শুভেন্দু অধিকারীর গলায় শোনা গেছে অন্য সুর।


নদী-ভাঙন নিয়ে কি দল বেঁধে কেন্দ্রের কাছে? বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা এখনও থামেনি। তার মধ্যেই এবার বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপি একজোট। রাজ্যের স্বার্থে কি এবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দল বেঁধে দরবার করবে তৃণমূল-বিজেপি? রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, নদী-ভাঙন নিয়ে দিল্লিতে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর জন্য মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।


আর তৃণমূল সরকারের সেই প্রস্তাব সমর্থন করল বিজেপি। সংবিধান দিবসেই মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, নদী ভাঙন নিয়ে দিল্লিতে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হোক। মঙ্গলবার বিধানসভায় সেই প্রসঙ্গ তোলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভাঙন নিয়ে একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা করে চলেছে। অর্থ ব্যয় করেছে। কিন্তু এত বড় ভাঙন একা রাজ্য সরকারের পক্ষে রোখা সম্ভব না। আমাদের উচিত সবাই মিলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করা।’’


স্পিকার এদিন ঘোষণা করেন, রাজ্যের তরফে যে প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যাবে, তাতে তৃণমূলের ৭ জন ও বিজেপির ৫ জন বিধায়ক থাকবেন। সেচমন্ত্রী ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রতিনিধিদলের সদস্য কারা হবেন, তা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলে ঠিক করবেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের আনা এই প্রস্তাব সমর্থন করে বিজেপি। দলের পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে যে কোনও উদ্যোগের সঙ্গে আমরা আছি। বিধানসভা যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তা মানতে প্রস্তুত।


কিন্তু, তৃণমূলের সঙ্গে দল বেঁধে দিল্লি যাওয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরেই কি দ্বিমত রয়েছে? শুভেন্দু অধিকারীর কথায় তীব্র হয়েছে সেই জল্পনা। এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, “লিখিত প্রস্তাব আসার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব। আমাদের বিধায়কদের কোন মিটিং এ ডাকা হয় না। ভিডিও থেকে শুরু করে কোন সরকারি আধিকারিক তাদের ফোন ধরেন না আমরা যাব কিনা সবাই মিলে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’’


প্রথমে বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎ। তারপর এবার ভাঙন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে বিজেপির সমর্থন। আর দুই শিবিরের বিধায়কদের দল বেঁধে দিল্লি যাওয়ার জল্পনা। যা নিয়ে কটাক্ষের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে বাম-কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “ভাঙন তো হয়েই চলেছে। ওখানেই যাচ্ছে না মমতা। দিল্লিতে সমঝোতা থাকলে এখানে কেন হবে না। শীত নেমে আসলে বসন্ত আস্তে দেরি হয়।’’ মঙ্গলবার শাসক-বিরোধী শিবিরের সব বিধায়ককে নতুন আলিপুর জেল মিউজিয়াম দেখতে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান স্পিকার। বুধবার অধিবেশন শেষ হওয়ার পর বিধায়কদের বাসে করে আলিপুর মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়ার কথা।


আরও পড়ুন: Job Seekers: দুর্নীতির অভিযোগে পথে নার্সিং চাকরিপ্রার্থীরা, আন্দোলন ঘিরে ধুন্ধুমার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অদূরে