জয়ন্ত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রক্তদান শিবিরের জন্য ২ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায়, নার্সিংহোমের মালিককে মারধর ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে। বজবজ পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে, পাল্টা দাবি অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের। 


ছুটে বেরিয়ে এলেন নার্সিংহোমের মালিক। সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি সামনে থেকে সজোরে ধাক্কা মারলেন তাঁকে। পিছন থেকে ধাক্কা দেওয়া ব্যক্তিকে টেন ধরলেন সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা আর এক ব্যক্তি। শুরু হল কথা কাটাকাটি। রক্তদান শিবিরের জন্য ২ লক্ষ টাকা না দেওয়ায়, নার্সিংহোম মালিককে মারধর, ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ লুৎফর হোসেন ও তাঁর ভাই মুজফ্ফর হোসেন। 


স্থানীয় সূত্রে খবর, সিসিটিভিটি ফুটেজে যাঁকে ধাক্কা দিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি মুজফ্ফর হোসেন, আর ভাইকে আটকাচ্ছেন দাদা শেখ লুৎফর হোসেন। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড। নার্সিংহোমের মালিক শেখ শইদুল আলির দাবি, গত রবিবার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের উদ্যোকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। রক্তদান শিবিরে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়। আমন্ত্রণপত্র হাতে দেওয়ার পরই ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়়। দাবি মতো টাকা দিতে অস্বীকার করেন শেখ শইদুল। তাতেই রেগে যান কাউন্সিলর ও তাঁর ভাই। 


আরও পড়ুন, আজও ম্যারাথন জেরা? কী কী প্রশ্নবাণে অনুব্রতকে জর্জরিত করবে ইডি?


অভিযোগকারীর দাবি, ওই দিন রাতে নার্সিংহোম থেকে বাড়ি ফেরার সময় মত্ত কাউন্সিলর ও তাঁর ভাই সহ বেশ কিছু ব্যক্তি তাঁকে ঘিরে ধরে মারধর করেন, প্রাণনাশের হুমকি দেন। যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের দাবি, ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। 


বজবজের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ লুৎফর হোসেন বলেন, '২ লক্ষ কেন, দু টাকা ওনার থেকে চাওয়া হয়েছে এমন প্রমাণ উনি দিতে পারবেন? আমার ভাইয়ের পূর্ব পরিচিত ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু তিনি না আসায় আমার ভাইয়ের সঙ্গে ওর কোন প্রকার বচসা বাঁধে, যা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। আমি আমার অফিস থেকে বেরিয়ে ওই মুহূর্তে দুজনকেই ছাড়িয়ে দিই। বজবজ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওই ন॥ার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্যই সম্ভবত তার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।' 


নার্সিংহোমের মালিকের দাবি, বজবজ থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে FIR না নিয়ে জেনারেল ডায়েরি নেওয়া হয়। পরে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের সুপারের অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। এবিষয়ে পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন, বজবজ থানার পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, কাউন্সিলররের বিবরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে তার প্রমাণ পাওযা যাচ্ছে না। বরং উনি বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করছেন। তবে অভিযোগকারী চাইলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।