সুনীত হালদার, সাঁকরাইল (হাওড়া) : তাঁর উপস্থিতিতে সিপিএমের পথসভায় হামলার অভিযোগ উঠেছিল। এরপর সিপিএমকে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করলেন সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক। বললেন, মেরে থেতো করে দেওয়া উচিত ছিল। ভদ্রতা দেখানো উচিত হয়নি। ভয় দেখিয়ে রোখা যাবে না, পাল্টা জবাব সিপিএমের।

সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পালের কথায়, এটা এত বেইমান, নিজে নেমে আলতা মেখে বলে, তুই আমায় দাঁড়িয়ে থেকে মেরেছিস। ওকে মেরে থেতো করে দেওয়া উচিত ছিল। আমার ভদ্রতা দেখানো উচিত হয়নি। অজয় দা, ঠিক বলেছিলেন, কুকুরের লেজ টানলে সোজা হয় না। ওরা কুকুরের লেজ। ওরা ভদ্রতা বোঝে না। ওরা অসভ্যতাই বোঝে। 

রাস্তার ধারে খান খান হয়ে পড়ে রয়েছে প্লাস্টিকের চেয়ার। গড়াগড়ি খাচ্ছে সাউন্ড সিস্টেমের যন্ত্রাংশ, স্ট্যান্ড ফ্যান। কারও নাক-মুখ ফেটে ঝরছে রক্ত। রবিবার সিপিএমের পথসভা ঘিরে এভাবেই তুলকালামকাণ্ড বেধে যায় হাওড়ার সাঁকরাইলে। তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ তোলে সিপিএম। 

প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিও প্রকাশ করে সিপিএম। রবিবার এই ঘটনার পর সোমবার চাঁপাতলায় একটি সভা করে তৃণমূল। সেখানেই সিপিএমকে নিশানা করেন সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক। যদিও এই ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। 

প্রিয়া পাল বলেছেন, আমরা যদি মনে করতাম, সিপিএমকে বদলা নেব, তাহলে একটাও কমরেড যারা আজকে দাঁড়িয়ে মিটিং-মিছিল করছে, আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তারা কিন্তু একজনও বাড়িতে থাকত না। এটা কিন্তু মনে রাখতে হবে। মাত্র ৫ খানা লোক নিয়ে মিটিং-মিছিল করছিল, আমাদের ছেলেরা জানতে গিয়েছিল, চোর চোর কেন বলছেন দাদা? এটা বলার জন্য তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। এবং ওদেরকে কেউ মারধর করেনি। আমি নিজে MLA হয়ে সেখানে গিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেছি। পাল্টা জবাব দিয়েছে সিপিএম। 

হাওড়া জেলা কমিটির সিপিএম সদস্য নন্দলাল মুখোপাধ্যায় বলছেন, মানুষকে নিয়ে আন্দোলন করব। ভয় পাব না, কোনও রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেই এবং সংবিধান মানে না।বিতর্কের মুখে আবার নিজের বক্তব্যের সাফাই দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। বলেছেন, রাগের মাথায় অনেক কথায় বলেছি। সবকথা ধরতে নেই। শান্তি বজায় থাকবে। কুকুরের সঙ্গে তুলনার ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে।  

দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল। তারপর থেকে কখনও আদালতে তোলার সময়, অনুব্রত মণ্ডলকে লক্ষ্য করে উঠেছে গরু চোর স্লোগান।কখনও হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে চটি। এই প্রেক্ষাপটেই কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেছে সৌগত রায় ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় গলায়। মঞ্চে বক্তব্য - সৌগত রায়, তৃণমূল সাংসদ 

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, যখন কেউ বলে চোর-চোর তখন আমার গায়ে লাগে। মনে হয় ঘুসি মেরে মুখ ভেঙে দিই। সব মিলিয়ে, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের গলায় যখন হুঁশিয়ারি, তখন নিচুতলাতেও যে তার প্রভাব পড়ছে, তারই প্রমাণ মিলল সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যে।