করুণাময় সিংহ, মালদা: কোথাও এভাবেই গড়াগড়ি খেতে দেখা গিয়েছিল গোপন ব্যালট কখনও আবার দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল, খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে, প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটি নিয়ে সম্প্রতি এভাবেই বারবার দলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে মালদায়। এবার ওই জেলার হবিবপুরে উঠল আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। 


জেলা পরিষদের প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিবাদের জেরে, তৃণমূলের অঞ্চল চেয়ারম্যানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল, দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, ঋষিপুরের অঞ্চল চেয়ারম্যান শিবানন্দ শর্মা। 


দলীয় সূত্রে খবর, মালদা জেলা পরিষদের হবিবপুর ৫ নম্বর আসনের প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদ মেটাতে গত শনিবার, বৈঠক ডেকেছিলেন ব্লক সভাপতি।  জখম নেতার পরিবারের দাবি, সেই বৈঠক থেকে মোটরবাইক চালিয়ে ফিরছিলেন অঞ্চল চেয়ারম্যান শিবানন্দ শর্মা। তখনই কেউ বা কারা, পিছন থেকে তাঁকে জোরাল আঘাত করে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান তিনি।


জখম তৃণমূল নেতার আত্মীয়া পুতুল চক্রবর্তীর কথায়, দল করতে গিয়ে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে, মেরে ফেলার চেষ্টা হয়, তাহলে দল করবে কী করে? প্রার্থী নিয়ে গন্ডগোল ছিল, তা নিয়েই হামলা করা হয়েছে, দলের লোক জড়িত। আমরা এর বিচার চাই।


খুনের চেষ্টার অভিযোগে, হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছে জখম তৃণমূল নেতার পরিবার। সেখানে তৃণমূলের ব্লক কমিটির এক সদস্য, অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি, একজন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এবং এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলা হয়েছে। 


তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি অপুল মজুমদারের কথায়, বাইক দুর্ঘটনার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।


তৃণমূলের বিরুদ্ধেই দলীয় নেতাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠায়, স্বাভাবিকভাবেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। যদিও দোষ প্রমাণ হলে দলগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।


দক্ষিণ মালদার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির কথায়, মালদার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী বলছেন, প্রথমে শুনেছিলাম, এটা দুর্ঘটনা। পরে জানতে পারি পরিবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে, প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দলও ঘটনার তদন্ত করবে, কারও বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণ হলে, দলগত সিদ্ধান্ত নেবে।  কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি দলের এই কোন্দল মেটাতে পারবে তৃণমূল? শেষমেশ নির্বিঘ্নে হবে প্রার্থী বাছাই? সেটাই এখন দেখার।