কলকাতা: আগেও বিদ্রোহী হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই সময় কোনও রকমে সামাল দেওয়া গিয়েছিল পরিস্থিতি। এবার আর সামলানো গেল না। তৃণমূল (TMC) ছেড়ে কংগ্রেসে (Congress) যোগ দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ইয়াসের হায়দর (Yasser Haidar)। রাজ্যের মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) জামাই ইয়াসের।


শনিূবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী ইয়াসেরকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই ইয়াসিনের তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগদানের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়। অধীরের পাশে বসে ইয়াসের বলেন, "আমি আগে যে দলে ছিলাম, সেখানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। কংগ্রেসে আসার ইচ্ছা ছিল বহুদিনের। অধীর আছেন এখানে। অনেক দিন ধরেই যোগাযোগ ছিল সৌমেন পালের সঙ্গে। কংগ্রেসে আসার একটাই কারণ, দলের সদস্য হয়ে কাজ করতে চাই। তৃণমূলে আমি রাজনীতিক হিসেবে নই, সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত ছিলাম। মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি কার প্রয়োজন। সেটা আমার রয়েছে। অধীরবাবুকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।"


দলে কাজ করতে পারছিলেন না, সেটা কি তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন ইয়াসের? উত্তরে বলেন, "কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি, তাই বলতে দ্বিধা নেই যে, তোলাবাজি, দুর্নীতি যত দেখেন আপনারা, আমি কখনওই জড়িত ছিলাম। দলের হয়ে ১২০ শতাংশ দিয়েছিলাম। ২০২১-এ কেন নাম উঠল না তালিকায়, জানতে পারিনি। এতদিন কাজ করেছি, রাজনীতি আমার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। আমি মানুষের সেবা করতে চাই। তৃণমূল আগে কংগ্রেসই ছিল। কংগ্রেসের প্রতি আমাদের ভারতীয়দের একটা ভালবাসা রয়েছে।"



আরও পড়ুন: JU Student Death : ভয়াবহ মৃত্যুর রাতে ছাত্রের ফোন পেয়েও কেন হস্টেলে ছোটেননি ডিন অফ স্টুডেন্টস? সুপারই বা কী করছিলেন?


ফিরহাদের মেয়ে প্রিয়দর্শিনীর স্বামী ইয়াসের। তাঁর বিদেশ যাওয়া এবং সেই সফরে এক অভিনেত্রীর সঙ্গী হওয়ার বিষয় সামনে আসে। ইয়াসির একাধিক বার বিদেশ গিয়েছেন এবং তাঁর মারফত বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে প্রিয়দর্শিনীকে নোটিসও ধরায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। 


 এর আগে, ২০২১ সালেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ইয়াসের। বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। সেই সময় তাঁর বক্তব্য ছিল, যাঁরা দিনরাত দলের জন্য কাজ করেন, তাঁদের কেউ পাত্তা দেন না। ভুঁইফোড় সেলিব্রিটিরা এসে টিকিট তুলে নিয়ে যান।


উল্লেখ্য, সেবার ফিরহাদকে পাশে নিয়েই প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। সেই ফিরহাদের জামাই-ই বিদ্রোহ ঘোষণা করতে শোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু সেবার পরিস্থিতি সামলে নেন ফিরহাদ। দলীয় পদ খোয়ান ইয়াসের। সেই থেকে মোটামুটি নিশ্চুপই ছিলেন ইয়াসের। কিন্তু আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বোমা ফাটানো নয়, সরাসরি তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন ইয়াসের।


ইয়াসের ‘টাইগার’ নামেও পরিচিত। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। যুব তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে একেবারে অগ্রভাগে দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাল কাটে তৃণমূলের সঙ্গে তার সম্পর্কে। টিকিট বিতরণ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেওয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয় দলের পদ থেকেও।