আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা:  দিল্লি থেকে নেতা এনে বাংলায় কি ভোট জেতা যায় - একুশে বাংলার বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিকে এই সুরেই কটাক্ষ করত তৃণমূল। এবার তৃণমূলকে কতকটা একই ধাঁচে বিঁধলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি প্রশ্ন তুললেন, তৃণমূল ত্রিপুরা নিয়ে তত্পরতা দেখাচ্ছে ভাল, কিন্তু যাঁদের সামনে রেখে ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তাঁরা তো বাংলার মানুষ। এতে করে কি ভোটে জেতা যায়?  

বাংলার পর তৃণমূলের টার্গেট ত্রিপুরা। বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩-এ। তবে ত্রিপুরা জয়ের লক্ষ্যে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। তবে শুধু ত্রিপুরা নয়। উত্তর-পূর্বের বাকি সাত রাজ্যেও সমানভাবে ভিত মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল। উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যই বর্তমানে NDA-র হাতে। 

তবে এই রাজ্যগুলির মধ্যে । ত্রিপুরার মোট জনসংখ্যার ৬৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ বাঙালি। অসমে ২৮ দশমিক ৯২। মিজোরামে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। মেঘালয়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ । এবং অরুণাচলপ্রদেশে ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বাঙালি রয়েছে। আর উত্তর-পূর্বে জমি তৈরি করতে, এই বাঙালি ভোটকেই টার্গেট করছে তৃণমূল। সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় মন্তব্য করেন, ' বিজেপি শাসিত রাজ্যে আমাদের ফুটবল খেলতে দিল না, কিন্তু আসল খেলা হলে দিশেহারা হয়ে যায়। উত্তর পূর্বে চমক দেখতে পাবেন'


সূত্রের খবর, ত্রিপুরা ও অসমে সংগঠন বাড়াতে, তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা সুস্মিতা দেবকে। সুস্মিতা উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসমের বাসিন্দা।  ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত শিলচরের বিধায়ক এবং ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত শিলচর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ থেকেছেন। সুস্মিতার বাবা, সন্তোষমোহন দেবও ত্রিপুরা পশ্চিম এবং অসমের শিলচর থেকে একাধিকবার সাংসদ হয়েছেন।
যদিও, তৃণমূলের স্ট্র্যাটেজিতে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না বিজেপি। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি এই বিষয়ে মন্তব্য করেন, 'উনি অন্য দলের নেত্রী ছিলেন, পার্টি মনে করলে করবে। ত্রিপুরায় এখানকার নেতারাই যাচ্ছে। বাইরে থেকে নেতা নিয়ে গিয়ে ত্রিপুরায় রাজনীতি হবে না। তবে ঠিক আছে,  শক্তিশালী বিরোধী হলে আমাদের সরকারও ভাল কাজ করবে। '



সূত্রের খবর, তৃণমূলের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছে অসমের গণসুরক্ষা পার্টির নেতারা। দলের প্রধান নবকুমার শরনিয়া, অসমের ২৫ লক্ষ বাঙালিকে একজোট করে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার ডাক দিয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা সেরে ফেলেছেন, অসমের রাইজর দলের বিধায়ক অখিল গগৈও। কিন্তু, এসবে ভর করে কি আগামী দিনে উত্তর-পূর্বে কি জমি মজবুত করতে পারবে তৃণমূল? সেটাই দেখার।