সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: বিকাশ ভবনের সামনে ৫ শিক্ষিকার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ। 


বিজেপি রাজ্য সভাপতির মতে, কেউ দাবি আদায়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, একদিকে রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ বাড়ির লক্ষ্মীদের রাস্তায় বার করে দেওয়া হচ্ছে। 


গতকাল, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ট্যুইটে লেখেন, ত্রিপুরায় ১০ হাজার ৩২৩ জন নিয়মিত শিক্ষক চাকরি হারালেও, বিজেপি কী করেছে? ভোট ইস্তেহারে লিখলেও কেন নিষ্ক্রিয়? অনেকে আত্মঘাতী। ওঁদের দাবি মানুন। নাটক পরে করবেন। 


এদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন দিলীপ। বললেন, উনি হয়ত জানেন না সিপিএম ওখানে বেআইনিভাবে নিয়োগ করেছিল। কোর্ট রায় দিয়েছিল তাঁদের তাড়িয়ে দিতে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব প্রত্যেককে চাকরিতে রেখেছেন কোর্টের বিরুদ্ধে গিয়ে। কারণ মানবিকতা আমাদের কাছে আগে, মানুষত্ব আগে। শিক্ষকরা সেই স্ট্যাটাস হয়ত পাননি। কিন্তু তাঁরা বেতন পাচ্ছেন, তাঁরা কাজ করছেন, পড়াচ্ছেন।  আর এখানে শিক্ষিকা সুইসাইড করার চেষ্টা করছেন। 


দিলীপ বলেন, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষার জন্য সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত। এখানে শিক্ষকদের এমন দুরবস্থা যে বিষ খেতে হচ্ছে। বেতন পাচ্ছে না বলে যেহেতু সরকারের বিরোধিতা করছে সেই জন্য তাদের ট্রান্সফার করা হচ্ছে। যে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে একটু সহমর্মিতা দেখানো উচিত। 


তিবি আরও বলেন, টিএমসির নেতারা যে ধরনের তালিবানি ব্যবহার করছেন, যে ধরনের অমানবিক কথাবার্তা বলছেন, তাতে  মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। কতটা হতাশ হলে মানুষ এধরনের অফিসের সামনে এসে বিষ খায়? কমপক্ষে সহমর্মিতা দেখান আপনারা। টাকা দিতে পারবেন না আমরা জানি। কারণ, দলকে দিতে গিয়ে টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। টিচার, সরকারি কর্মচারীরা পাবেন কি করে? কিন্তু, এই ধরনের মন্তব্য করাটা খুবই অমানবিক। 


এখানেই থেমে থাকেননি দিলীপ। আরও বলেন, তাঁদেরকে (শিক্ষিকা) বিজেপির ছাপ মেরে দেওয়া হচ্ছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই বিজেপির ছাপ মেরে দিচ্ছে। তাঁরা (আন্দোলনকারী) কি বলেছেন আমরা বিজেপি? আমি তো নিজেই জানি না তাঁরা বিজেপির লোক কিনা। ওই সংগঠনের সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি তো কোনওদিন যাইনি, আমি জানিও না।


কিন্তু তাঁরা তাঁদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছেন। সেই অধিকার তাঁদের আছে। সরকার মানবে কি মানবে না, তা পরের বিষয়। আগে কথা বলতে পারে তো। তা না করে তাঁদের তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। তাঁরা সুইসাইড চেষ্টা করেছেন বলে তাঁদের নিয়ে মজা করা হচ্ছে। 


এদিন নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, আজকে লক্ষীর ভাণ্ডার দেখাচ্ছেন আপনি, আর বাড়ির লক্ষ্মীদেরকে রাস্তায় বের করছেন।