রাজা চট্টোপাধ্যায়, ধূপগুড়ি: মহারাষ্ট্রের (Maharastra) থানেতে সেতু নির্মাণের সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ক্রেন ও স্ল্যাব ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ২০ জনের। আহত হয়েছেন ৩ জন, এখনও নিখোঁজ ৮। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ধূপগুড়ির ২ বাসিন্দা। একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে পরিবার।


ভিনরাজ্য়ে কাজে গিয়ে মৃত বাংলার দুই: কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন ভিনরাজ্যে। ভেবেছিলেন, কিছু টাকা উপার্জন করে বাড়ি ফিরবেন। তাঁরা ফিরছেন, তবে কফিনবন্দি হয়ে। পরিজনদের মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে ছেড়েছেন তাঁরা। মহারাষ্ট্রের থানেতে ক্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ২০ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২ বাঙালিও।


প্রশাসন সূত্রে খবর, থানের সাহাপুর এলাকায় সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছিল। ভোরে সেখানে কাজ করছিলেন কর্মীরা। নির্মীয়মাণ সেতুতে স্ল্যাব তোলার সময় শ্রমিকদের মাথার ওপর ভেঙে পড়ে ক্রেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৭ জনের। মৃতদের মধ্য়ে রয়েছেন ধুপগুড়িরর পশ্চিম ডাউকিমারির বাসিন্দা গণেশ রায় (৩৮) এবং ধুপগুড়িরই উত্তর কাঠুলিয়ার বাসিন্দা প্রদীপ রায় (৩৬)। প্রিয়জনের মর্মান্তিক পরিণতির পর কান্নার রোল দুই পরিবারে। মৃত গণেশ কায়ের আত্মীয় নীলকান্ত ঋষি বলেন, “১০০০ ছেলে বাইরের রাজ্যে। গ্রামে কোন কাজ নেই। পরিবারকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিতে হল।’’দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ জন, এখনও নিখোঁজ ৮। ফলে, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।


পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে শাহপুরের সরলাম্বে গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সম্র্ুদ্ধি এক্সপ্রেসের তৃতীয় দফার নির্মাণকাজে যুক্ত ছিলেন কর্মীরা। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে হাত লাগান পুলিশকর্মী, দমকলকর্মী ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে ট্যুইটারে PMO থেকে লেখা হয়, 'মহারাষ্ট্রের শাহপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ব্যথিত। যাঁরা প্রাণ হারালেন, তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। দুর্ঘটনায় জখমদের আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা করি। দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছে NDRF ও স্থানীয় প্রশাসন। যাঁরা আক্রান্ত তাঁদের সহায়তায় সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। PMNRF থেকে মৃতদের পরিবারকে  লক্ষ টাকা করে সাহায্য করা হবে। এবং আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।' মহারাষ্ট্র সরকারের তরফেও সাহায্যের কথা জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ঘোষণা করেন, 'মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সুইৎজারল্যান্ডের একটি সংস্থা কাজ করছিল। ঘটনায় পুঙ্খনাপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'


আরও পড়ুন: IAS Success Story: সকালে ডিম বিক্রি, বিকেলে কলেজে পড়া, লড়াইয়ের আরেক নাম IAS মনোজ কুমার রায়