কলকাতা: কথায় বলে কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। জীবনে প্রতিকূল পরিস্থিতি আসবে কিন্তু লড়ে যেতে হবে প্রতি মুহূর্তে। যতক্ষণ পর্যন্ত না সাফল্য আসবে লড়াই থামালে চলবে না। সেই লড়াই করে দেখিয়ে দিয়েছেন IAS মনোজ কুমার রায় ( IAS Manoj Kumar Roy Success Story) । পেট চালাতে সকালে বিক্রি করেছেন ডিম। বিকেলে করেছেন পড়াশোনা। মনোজ কুমার রায়ের হার না মানায় যে কোনও চিত্রনাট্যকে হার মানায়।
হার না মানা লড়াই:
বিহারের সপৌল জেলার বাসিন্দা মনোজ। মনোজের কথায়, ছেলেবেলা থেকেই শিখেছিলেন শিক্ষার থেকে অর্থ উপার্জন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর বিহার ছাড়েন তিনি। ১৯৯৬ সালে পাড়ি দেন দিল্লিতে। প্রান্তিক এলাকার সেই তরুণ হঠাৎ শহরে এসে নানা সমস্যা সম্মুখীন হয়েছিলেন। কিন্তু পিছিয়ে যাননি তিনি। বরং বরাবর চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়াই করে গিয়েছেন। কীভাবে পেট চালাবেন তা ছিল সে সময়ের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। দ্বাদশ শ্রেণি পাশে কোনও কাজও মিলছিল না। শুরু করলেন ডিম এবং সবজি বিক্রি করা। প্রায় মাসখানকে পর রেশন দিতে শুরু করেন দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত যাতায়াত থেকেই পরিচয় হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই পড়ুয়া উদয় কুমারের সঙ্গে। দয়ের সঙ্গে পরিচয়ই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। জানতে পারেন উদয় তাঁরই গ্রামের বাসিন্দা। উদয় মনোজকে পড়াশোনা শেষ করার পরামর্শ দেন। বন্ধুর কথা মেনেই মনোজ ভর্তি হন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অরবিন্দ কলেজে। সকালে বিক্রি করতেন ডিম। আর বিকেলে করতেন কলেজে পড়াশোনা। এভাবেই স্নাতক হন আজকের IAS মনোজ কুমার রায়।
বন্ধু উদয়ই পরামর্শ দেন UPSC পরীক্ষায় বসার। কিন্তু বেশ দোটানাতেই ছিলেন মনোজ। আদৌ তিনি IAS হতে চান কিনা সে ব্যাপারে দ্বন্দ্ব ছিল। ২০০১ সাল থেকে UPSC পরীক্ষার জন্য শুরু করেন প্রস্তুতি। মনোজের এক বন্ধু পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলে এক অধ্যাপকের সঙ্গে। ঘটনাচক্রে তিনি সেই সময়ে ছিলেন দিল্লিতেই। তাঁর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেন ভূগোল UPSC অ্যাডিশনাল বিষয় হিসেবে নেবেন। তিন বছর পাটনা থেকে পড়াশোনা করেন। সেই সময় খরচ জোগাতে শিশুদের পড়ানো শুরু করেন। ২০০৫ সালে প্রথম UPSC পরীক্ষায় বসেন মনোজ। কিন্তু পাশ করতে পারেননি তিনি। ফেরেন দিল্লিতে।
সিদ্ধান্ত নেন হিন্দি ভাষায় দেবেন পরীক্ষা। কিন্তু হিন্দিতে UPSC-র জন্য স্টাডি মেটেরিয়াল তেমন ছিল না। UPSC-র ক্ষেত্রে দুটি যে ভাষার পরীক্ষা হয়, তার মধ্যে একটি হল ইংরেজি। সেটাও একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায় মনোজের কাছে। কিন্তু তাতে হার মানেননি মনোজ। চার চারবার ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে আসে সাফল্য। পঞ্চমবারে UPSC উত্তীর্ণ হন মনোজ।
ঠিক কী পদ্ধতিতে এসেছিল সাফল্য?
- প্রিলিমস নয়, মনোজ প্রস্তুতি নিতেন মেনসের জন্য।
- তাতে স্বাভাবিকভাবেই ৮০ শতাংশ প্রিলিমসের সিলেবাস শেষ হয়ে যেত।
- ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির NCERT- র বই পড়তেন।
আরও পড়ুন: IBPS Recruitment: ব্যাঙ্কে চাকরির সুবর্ণ সুযোগ, ১৪০২টি স্পেশ্যাল অফিসার পদে হবে নিয়োগ
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI