উলুবেড়িয়া: হাইকোর্টের অনুমতির পরে সভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। ২১ জুলাই-এর উলুবেড়িয়ার সভা বাতিল ঘোষণা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। অনুমতি পেলেও, একাধিক অসুবিধের কারণ দেখিয়ে শুভেন্দুর সভা বাতিল করা হয়েছে। ২১-এর বদলে ২৭ জুলাই প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী আজই শর্তসাপেক্ষে কাল রাত ৮টায় উলুবেড়িয়ায় সভার অনুমতি দিয়েছিল হাইকোর্ট।
তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের দিন, শর্তসাপেক্ষে উলুবেড়িয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর সভার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, আদালতের অনুমতি পাওয়ার পরও, সভা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
২১শে জুলাই, ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের দিনই। উলুবেড়িয়ায় শর্তসাপেক্ষে শুভেন্দু অধিকারীর সভার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, আদালতের অনুমতি পাওয়ার পরও, সভা না করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। অর্থাৎ ২১ জুলাই উলুবেড়িয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর সভা হচ্ছে না।
বিজেপির আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে, শর্তসাপেক্ষে উলুবেড়িয়ায় বিজেপির সভার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশে বিচারপতি বলেন, বিজেপি জেলা অফিস সংলগ্ন মনসাতলা মাঠে সভা করতে হবে। রাত ৮টা থেকে শুরু করতে হবে সভা। এরইসঙ্গে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখারও নির্দেশ দেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য।
২১ জুলাই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মহাসমাবেশ আর ওই দিনই ‘উলুবেড়িয়া চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপি। পুলিশ কর্মসূচির অনুমোদন না দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গেরুয়া শিবির। বিজেপির আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার এদিন আদালতে বলেন, অনেক দিন আগে থেকেই কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। দিল্লি থেকে নেতারা আসবেন। তাঁরা ভুবনেশ্বরে নামবেন এবং সেখান থেকে এখানে আসবেন। আমরা, সন্ধে সাড়ে পাঁচটা থেকে সাতটা পর্যন্ত সভা করার অনুমতি চাই।
এর পরই, বিজেপির আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যর প্রশ্ন, ব্যক্তিগত জমিতে কেউ যদি সভা করার অনুমতি না দেন, তাহলে আদালত কীভাবে তার সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে? যদি বৃহস্পতিবারই সভা করতে হয়, তাহলে রাত ৮টার আগে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। তখন, রাজ্যের তরফে আইনজীবী অনির্বাণ রায় বলেন,
বৃহস্পতিবার, ধর্মতলার সমাবেশে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ আসবেন। ঝাড়গ্রাম, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার গাড়ি আসবে। এরা সবাই হাওড়ার ওপর দিয়ে আসবে। হাওড়া থেকে প্রায় ৫০০ গাড়ি আসবে। ট্রেনে করে এবং পায়ে হেঁটেও মানুষ আসবেন।
৩ শিফটে পুলিশকর্মীরা কাজ করবে। প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত মানুষের ফেরার প্রক্রিয়া চলবে। ২ হাজার মানুষকে জায়গা দেওয়ার মত জায়গা বিজেপির আছে? কারা কারা উপস্থিত থাকবেন, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। জায়গা পেলে ২২ জুলাই করুন। দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কিছু গন্ডগোল হলে দায়িত্ব আমাদের।
কলকাতায় ৩ হাজার ৭০০ পুলিশকর্মী, RAF এবং একাধিক অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার পদ মর্যাদার আধিকারিক দায়িত্বে থাকবেন। বাকি জেলাতেও প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। হাওড়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ, ৩-৪টি জেলার মানুষ হাওড়া হয়ে কলকাতায় আসবেন।
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর, বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন,বিজেপির জেলা অফিস সংলগ্ন মনসাতলা মাঠে সভা হবে। হাওড়ার স্থানীয় মানুষ ছাড়া বাইরের লোক যেন সভায় না আসেন, তা নিশ্চিত করবে বিজেপি। রাত ১০ টা পর্যন্ত সভা করা যাবে। মহকুমা শাসক পরিদর্শন করে দেখবেন যে, ওই সভাস্থল ২০টি লাউড স্পিকারের জন্য উপযুক্ত কিনা?
মহকুমা শাসক চাইলে, লাউড স্পিকারের সংখ্যা কমাতে পারেন। কিছুদিন আগেই যেহেতু ওই এলাকায় অশান্তি হয়েছিল, তাই বক্তারা যেন কোনও প্ররোচনামূলক বক্তব্য না রাখেন এবং প্ররোচনামূলক ভিডিও না দেখান, যার দ্বারা মানুষ উত্তেজিত হন। সব মিলিয়ে তুঙ্গে উঠেছে তরজা।