পার্থপ্রতিম ঘোষ, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা : চাকরি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় লক আপে রাত কাটল উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের ( Upper Primary Jobseekers )। ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে কালীঘাট থানার পুলিশ। ধৃতদের হেফাজতে নিতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।


সরকারি কর্মীকে নিগ্রহ, কাজে বাধা-সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। গতকালের ঘটনায় মহিলা চাকরিপ্রার্থী-সহ ৫৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের রাত কেটেছে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে। তারপর দুপুর দুটোর কিছু পরে লালবাজার থেকে ৫টি গাড়ি করে আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ধৃতদের। 


গতকাল কী ঘটেছিল


শুক্রবার, কালীঘাট থানা ও মন্দিরের কাছ থেকে এসে, কালীঘাট রোড ধরে একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার উল্টোদিকে, মন্দিরের মূল গেটের কাছে পৌঁছে যান উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। শুরু হয় ধরপাকড়, হুলস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাস্তায় শুয়ে পড়েন কয়েকজন আন্দোলনকারী। ৫৫ জন মহিলা-সহ ৫৯ জন চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা, সরকারি কর্মীকে নিগ্রহ-সহ 
অবৈধ জমায়েত এবং জোর করে আটকে রাখার মতো ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।


বিরোধীদের  প্রতিক্রিয়া 


পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। 'পুলিশ মানুষের কন্ঠ রোধ করতে চায়', মন্তব্য করেছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন,' নিরাপত্তার জন্য আন্দোলনকারীদের হাই সিকিওরিটি জোন থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ ঠিক আছে। তা বলে জামিন অযোগ্য ধারা দেওয়া চরম অসহিষ্ণুতার পরিচয়'। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের মত, 'এমন অমানবিক সরকারের এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই'। কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে কংগ্রেসের তরফেও। 'রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসন খুন-জখম হলে লুকোয়, আর নিরীহ আন্দোলনকারীদের কড়া ধারা দিচ্ছে',  বিস্মিত প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়।


তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূলও। তৃণমূলের সোশাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্যের পাল্টা যুক্তি,  'অন্যরাজ্যে কী হয় মানুষ তা জানে। আগে তার বিচার করুন।'  অন্যদিকে লালবাজারের তরফে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের কোনও অনুমতি ছিল না। সেই জন্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 


আরও পড়ুন: প্রতিদিন হোটেল ভাড়া ৭০ হাজার টাকা, অযোধ্যার হোটেল এখন তাজ-ওবেরয়ের চেয়েও বেশি দামি