সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: বড়দিনের আনন্দের দিনেও বিষাদের ছায়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের পোরোলদা গ্রামের 'দে' পরিবারে। কারণ তাঁদের ছেলে চন্দন দে, নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতায়।
তবে গ্রামে শেষ কবে পুলিশ ঢুকে কাউকে গ্রেফতার করেছে মনে করতে পারছেন না এলাকাবাসীরা। সেই গ্রামেরই মেধাবী ছেলের এইভাবে গ্রেফতারি হওয়াতে হতবাক সকলে। বাবা মুড়ি ভেজে বিক্রি করে সংসার চালান। ৬৯ বছর বয়স হওয়া সত্বেও পাননি বার্ধক্য ভাতা। কোনওমতে টেনেটুনে সংসার চালান তিনি। 'চাকরি পাইনি' বলে বিয়ে করেননি বাড়ির একমাত্র ছেলে। বাড়িতে সঞ্চয় কিছু নেই। এই অবস্থায় ছেলেকে কীভাবে ছাড়াবেন বুঝতে পারছেন না তাঁরা। সকলের কাছে আবেদন করছেন যেনও ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের ছেলেকে।
অপরদিকে, বড়দিনে (Christmas) বড় ধাক্কা রাজ্যের, ৪ চাকরিপ্রার্থীরই জামিন। ফের জেল হেফাজতের সওয়াল পুলিশের, খারিজ আদালতের। ফের রাজ্যের আবেদন উড়িয়ে চাকরিপ্রার্থীদের জামিন মঞ্জুর। ধৃত ৪ চাকরিপ্রার্থীকে জামিনে মুক্ত করল আলিপুর আদালত (Alipore Court)। মূলত ২২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে বিক্ষোভ দেখিয়ে বন্দি চাকরিপ্রার্থীদের ফের জেল হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। ধৃত ৪ চাকরিপ্রার্থীকে আরও ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয় আদালতে। গত শুক্রবার বিক্ষোভ দেখিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন ৫৯ জন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। গত শনিবার ৫৫ জন চাকরিপ্রার্থীর জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
নিয়োগ চেয়ে চাকরিপ্রার্থীরা গ্রেফতার হওয়ার পর বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছিলেন, 'গ্রেফতার করা হয়েছে, গুলি তো করা হয়নি।' প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে চাকরি আন্দোলনের ঢেউ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল(Upper Primary Job Protest near CM House)। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছিল আপার প্রাইমারি আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের। এরপরেই আন্দোলনকারী চাকরীপ্রার্থীদের চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন, বছরশেষে ডিমের দামে আগুন, বড়দিনে কোথায় গিয়ে দাঁড়াল দর ?
সল্টলেকে নিয়োগের দাবি ধর্নায় বসেছিল আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়, আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তীব্র আক্রমণে বিজেপি বিধায়ক। পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র, আক্রমণ হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের। চাকরিপ্রার্থীদের যেখানে বসতে দেওয়া হয়েছে সেখানে নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। অভিযোগ করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। ব্যবস্থা করতে বায়ো টয়লেটের। এই দাবি তুলে পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েছিলেন কৌস্তভ বাগচী।