সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: হেমতাবাদ পার্সেল বিস্ফোরণকাণ্ডে (Hemtabad Parcel Blast) ধৃত টোটোচালকের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত। সোমবার রায়গঞ্জ আদালতে তোলা হয় রঞ্জন রায় নামের ওই ধৃতকে। নিজে টোটো চালিয়ে এসে ওষুধের দোকানে তিনিই পার্সেলটি নামিয়ে রেখে চম্পট দেন বলে জানান সরকারের পক্ষের আইনজীবী। ধৃতকে হেফাজতে রেখে জেরার অনুমতি চাওয়া হয়। সেই আবেদনে মঞ্জুর করেন সিজিএম আদালতের বিচারক। ধৃতকে জেরা করে গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত হাতে আসবে বলে আশাবাদী পুলিশ।


রবিবার সকালে টোটোচালক রঞ্জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনের ২৮৬ এবং ৩৩৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। বিস্ফোরক আইনের ৩ এবং ৪ নম্বর ধারাতেও মামলা দায়ের হয় অভইযুক্তের বিরুদ্ধে। এর পর তাঁকে জেরা করেত ১০ দিনের হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয়। সোমবার তাতেই অনুমোদন মিলল। পুরনো শত্রুতা থেকে পরিকল্পনা মাফিক বিস্ফোরক বোঝাই পার্সেল পাঠানো হয়েছিল কি না, এই ঘটনায় আর কে কে যুক্ত, রঞ্জনকে জেরা করে বিশদ তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছে পুলিশ।


শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur News) ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (India-Bangladesh Border) সংলগ্ন হেমতাবাদে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে সেখানে ওষুধ ব্যবসায়ী বাবলু চৌধুরীর নামে দোকানে একটি পার্সেল রেখে যান ধৃত টোটোচালক (Toto Driver)। পার্সেল নামিয়ে রেখে তৎক্ষণাৎ কার্যত উধাও হয়ে যান তিনি। সেই পার্সেলটি ঘুলতেই তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে গুরুতর জখম হন বাবলু-সহ দোকানে উপস্থিত চার জন। এর মধ্যে তিন জনকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করেত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়ে যান অন্য জন।


আরও পড়ুন: Polba-Dadpur News: আধার সংযুক্তিতে গঙ্গাজল কেনা বাধ্যতামূলক! মোদি বলেছেন, দাবি বিজেপি নেতার, পাল্টা তৃণমূলের


পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পার্সেলের উপর শুধুমাত্র বাবলুর নাম এবং ফোন নম্বরেরই উল্লেখ ছিল। কে ওই পার্সেল পাঠিয়েছেন, কোথা থেকে পাঠিয়েছেন, তা লেখা ছিল না। এই ঘটনায় প্রাণহানি না ঘটলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতারি এবং কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হন এলাকাবাসী। এ নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতেই শনিবার দিনভর সেখানে বন্‌ধ কর্মসূচিও পালিত হয়।


তবে রঞ্জনকে জেরা করতে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি পুলিশকে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, পার্সেলটি পৌঁছে দেওয়ার সময় টোটোয় এক মহিলা বসেছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমে তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়। তার পর টোটোটিকে শনাক্ত করা যায়। সেই সূত্র ধরেই হদিশ মেলে রঞ্জনের।