সুদীপ চক্রবর্তী, অনির্বাণ বিশ্বাস, ইসলামপুর: নিজেকে বিদ্রোহী বলে আগেই দাবি করেছিলেন। এবার দলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়ালেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী (Abdul Karim Chowdhury)।  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek banerjee) নির্দেশ দেওয়ার পরও উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল (TMC) সভাপতি কানাইয়ালাল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে দাবি করেছেন করিম। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 


অভিষেকের জনসভায় ডাক না পাওয়ায় আগেও সরব হন করিম


এর আগে অভিষেকের জনসভায় ডাক না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন করিম (Uttar Dinajpur News)। শনিবার ফের সংবাদমাধ্যমে  মুখ খোলেন তিনি। বলেন, "অভিষেক হোক বা মমতা ব্যানার্জিই হোক, মমতা ব্যানার্জি ডাকলেও তো আমি যাব না।" বিদ্রোহ তিনি আগেই ঘোষণা করেছেন। এবার দলের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়ালেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক করিম। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালালের সঙ্গে তাঁর তিক্ততাও পৌঁছল চরমে। 


গত ৩০ এপ্রিল ইসলামপুরের কোর্ট ময়দানে সভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভায় যাননি ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক করিম চৌধুরী। 
২ মে ইটাহারে অভিষেকের সাংগঠনিক বৈঠকেও যোগ দেননি। যা নিয়ে প্রশ্ন করায়, এদিন নিজেকে সরাসরি বিদ্রোহী ঘোষণা করে, বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইসলামপুরের বিধায়ক।


আরও পড়ুন: Bankura News: ২ মাস মেলেনি রেশন ! বন্ধ দুয়ারে রেশন প্রকল্প, অবরোধ-বিক্ষোভ বাঁকুড়ায়

করিম তিনি সরাসরি নিশানা করেন উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালালকে। দুর্গাপুরে সাংগঠনিক বৈঠকে কেন গেলেন না, প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে বলেন, "আমি তো বিদ্রোহী এমএলএ না! একটা বিদ্রোহী বিধায়ক কেন চলে যাবে সাংগঠনিক মিটিংয়ে? আমি তো বিদ্রোহী।"


অভিষেকের নির্দেশের পর কি করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কোনও ভাবে? প্রশ্নে উত্তরে বিধায়ক বলেন, "না, না, কিছু করেনি। ও কোনও কথা তো বলেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ওকে তিনবার বলেছিল, যে কানাইয়া তুমি ওই ইসলামপুরটা করিমদাকে ছেড়ে দাও। ২০১৯, ২০২০তে, ২০২১-এ। কিন্তু ও শুনছেই না। মমতাদির কথাও শোনে না ও।"


এ নিয়ে যদিও তৃণমূল জবাব এড়িয়ে গিয়েছে। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জেলা নেতৃত্বের উপর উত্তর দেওয়ার দায় ছেড়েছেন।
উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, "করিম চিরকালই বিদ্রোহী। তৃণমূলের আজকের এই অবস্থা, অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।"


উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূলের অস্বস্তি কাটার লক্ষণই নেই

এ দিকে, পঞ্চায়েতে প্রার্থী খুঁজতে, অভিষেক যখন গোপন ব্য়ালটে ভোট নিচ্ছেন, উত্তর দিনাজপুরে সামনে এসেছে টিকিটের দাবিতে বিক্ষোভের ছবি।
শুক্রবার গোয়ালপোখরে, পঞ্চায়েত ভোটে টিকিটের দাবিতে, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মহম্মদ নুরউদ্দিনের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান একদল তৃণমূল কর্মী, যার নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। সব মিলিয়ে উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূলের অস্বস্তি কাটার লক্ষণই নেই।