বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রেম দিবসের আগেই গোলাপে এক অন্য কাঁটা। অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত গোলাপ। কয়েক মাস আগে কংসাবতী নদীর জলে নষ্ট হয়েছে অধিকাংশ গোলাপ গাছ। ফলে চাহিদা থাকলেও যোগানে ঘাটতি রয়েছে ভালোবাসার সপ্তাহে। ফলে পাইকারি দরে গোলাপের প্রতি শ' বিকোচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। প্রবল সমস্যায় পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গোলাপ চাষিরা। 


পাঁশকুড়ার ক্ষীরাইয়ের ফুলের উপত্যকায় যখন সমারোহ, তখন পাঁশকুড়ার অন্য প্রান্তে গোলাপের বাগানে কার্যত যেন আঁধার ঘনিয়ে এসেছে। আজ ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রেম দিবসে ভালবাসার মানুষটির জন্য একটি টাটকা গোলাপ উপহার, চাই-ই চাই সবার। কিন্তু সেই গোলাপে এবার কাঁটা অজানা ভাইরাস। তারফলে ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে গোলাপ গাছ। 


পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত মাইসোরা, পঞ্চম দুর্গা, রাজশহর, নস্করদিঘির বিস্তীর্ণ এলাকাতে নদীপাড় ঘেঁষে চাষ হয় গোলাপের। দূর থেকে যে দৃশ্য নয়নাভিরাম। তবে এবার অজানা ভাইরাসের প্রকোপের পাশাপাশি, বেশ কয়েক মাস আগে কংসাবতী নদীর জলস্তর বাড়ায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল গোলাপ বাগান। যে কয়েকটি গোলাপ বাগান এই অকাল বর্ষণ থেকে রক্ষা পেয়েছিল, সেগুলোতেও তেমন ফুল নেই। আবার যেগুলোতে ফুল আছে সেগুলোতে আবার দেখা দিয়েছে ভাইরাস।


অজানা এই ভাইরাসের কারণে ফুল গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফুলের পাপড়িতে কালো রঙের আস্তরণের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেই 'কাজল কালো' ছাপ পড়া গোলাপ বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। ফুলের জোগান না থাকায় ভালো ফুল ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভ্যালেন্টাইনডে কে সামনে রেখেই প্রতিবছর গোলাপ‌ বিক্রি হত চড়া দামে। আর গোলাপের যোগানও থাকত ব্যাপক হারে। বিঘার পর বিঘা জমি থেকে লাখ লাখ টাকার গোলাপ বিক্রি হয়ে থাকে ফুল বাজারে। 


কিন্তু এইবছর অকাল বর্ষণ ও এক অজানা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে  বিঘার পর বিঘা জমির গোলাপ চাষ নষ্ট হয়েছে। রোগ লেগে নষ্ট হয়েছে ফুল, ঝরে পড়ছে পাতা। গোলাপ ফুলের কুঁড়ি ফোটার শুরুতেই শুকিয়ে যাচ্ছে ফুল। চাষীদের অভিযোগ সার ওষুধ দিয়েও বাঁচানো যাচ্ছে না গোলাপ গাছগুলোকে। ফলে চিন্তার ভাঁজ রয়েছে চাষীদের কপালে। নষ্ট হওয়া ফুলগুলিকে বাগানের বাইরেই ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। লাভের সময় ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষিরা।