উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী : বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। তার আগে বঙ্কিম-স্মরণে বিজেপি। দেশ জুড়ে পালিত হল 'বন্দে মাতরম' গানের সার্ধশতবর্ষ। তার মধ্যেই জনগণমন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য় করলেন কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ। পাল্টা, জবাব দিয়েছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল। 

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, পরিবারে কন্যা সন্তান হয়েছে, নাতনিকে নিতে ফুল ও বেলুনে সাজানো গাড়ি নিয়ে নার্সিংহোমে হাজির দাদু

Continues below advertisement

বন্দে মাতরমের সার্ধশতবর্ষ। তাতেও লাগল রাজনীতির ছোঁয়া! এবার কার্যত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়কে রাজনীতিতে নামানোর পরিস্থিতি! বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। তার আগে কে বাঙালি সংস্কৃতির ধারক-বাহক তা নিয়ে কার্যত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্য়ে! এই আবহে শুক্রবার দেশ জুড়ে পালিত হল 'বন্দে মাতরম' গানের সার্ধশতবর্ষ।কলেস্ট্রিটে যে বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ঠনঠনিয়া থেকে সেই বাড়ি পর্যন্ত মিছিল করলেন শুভেন্দু অধিকারী।  চুঁচুড়ার জোড়াঘাটে যে বাড়িতে বসে 'বন্দে মাতরম' গানটি লিখেছিলেন সাহিত্য সম্রাট, সেই বাড়িতে গেলেন শমীক ভট্টাচার্য। দিল্লিতে অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন নরেন্দ্র মোদি! কিন্তু বঙ্কিমের লেখা বন্দে মাতরমের প্রশংসা করতে গিয়ে বিশ্বকবির লেখা জনগণমন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য় করলেন কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেরি। তিনি বলেছেন, আমি ইতিহাসের গভীরে যেতে চাই না, কিন্তু বন্দে মাতরমকে জাতীয় সঙ্গীত করার জন্য জোরালো দাবি উঠেছিল, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তখন জন গণ মন-কে জাতীয় সঙ্গীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা ব্রিটিশদের স্বাগত জানাতে রচিত হয়েছিল।  এর পাল্টা বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটকের মন্ত্রী প্রিয়ঙ্ক খড়্গে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, আরেক দিন, আরএসএসের হোয়টস্যাপ-ইতিহাসের আর একটা পাঠ! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১১ সালে ভারতভাগ্যবিধাতা লিখেছিলেন। তার প্রথম স্তবকটি জনগণমন। ১৯১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় কংগ্রেসের অধিবেশনে গাওয়া হয়েছিল। সেটি কোনও রাজাকে বন্দনা করতে সৃষ্টি হয়নি।’ তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষামন্ত্রী ও বিধায়ক  ব্রাত্য বসু বলেন, বিজেপি একটা বিভাজনের দল। ইদানিং বঙ্কিমচন্দ্র চ্যাটার্জি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে বিভেদ ঘটাতে চায়। বিজেপি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে একেবারেই পছন্দ করে না। কবিগুরু ব্রাক্ষ্মধর্মের ধারক। তিনি তার গোটা জীবন, লেখা, কর্মে সম্প্রীতির কথা বলেছেন। এটা বিজেপির পছন্দ নয়।' 

বিরোধী দলনেতা  শুভেন্দু বলেন, উনি তো কমিউনিস্ট, কখনও বন্দে মাতরম বলেননি...মোদি মন কি বাতে বলেছেন, এরপর কে কী বলল কিছু যায় আসে না...। এদিন বন্দে মাতরমের সার্ধশতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান থেকে নাম না করে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদি।প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, ১৯৩৭ সালে বন্দে মাতরমের গুরুত্বপূর্ণ স্তবক, যেটা ছিল গানটির প্রাণ, সেগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বন্দে মাতরমের ওই বিভাজন দেশভাগের বীজ বপন করেছিল। জাতি গঠনের এই ‘মহামন্ত্র’-র সঙ্গে কেন এই অবিচার করা হয়েছিল? ' পাল্টা বিজেপি ও আরএসএস-কে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, এটা সকলের জানা যে, স্বাধীনতার আন্দোলনের সময় RSS এবং সঙ্ঘ পরিবার ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিল, ৫২ বছর ধরে তারা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেনি।' অন্যদিকে, 'বন্দে মাতরম' এবং 'জন গণ মন' দুটো নিয়েই অত্যন্ত গর্ব করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের প্রতিটি সমাবেশ এবং অনুষ্ঠানে এই দুটি গানই শ্রদ্ধার সাথে গাওয়া হয়, যা ভারতের ঐক্য ও গর্বের প্রতীক।