কলকাতা : রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপের মধ্যেই কলকাতায় দ্রুত বাড়ছে ভাইরাল ফিভার আক্রান্তের সংখ্যা। যাঁদের অনেকেই H3N2 ভাইরাসে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতি সংক্রামক এই ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় কলকাতার অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হয়েছে বেডের টানাটানি।
হঠাৎ করে ধুম জ্বর। বাড়িতে একজনের শুরু হতে না হতে বাকিরাও শয্যাশায়ী। শহরে ফের ভাইরাল ফিভারের দাপট। চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই একটি বিশেষ ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত।সেটি হল - ইনফ্লুয়েঞ্জা A ভাইরাসের উপপ্রজাতি H3N2.বিশেষ এই ভাইরাল ফিভারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জ্বর দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শ্বাসযন্ত্রের নীচের অংশে। কারও কারও ক্ষেত্রে শুরু হচ্ছে ডায়েরিয়া।
চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্তদের হাঁচি, কাশি থেকে দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ।শিশু থেকে বয়স্ক - রেহাই মিলছে না কারও। ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অভিরূপ সরকার বলেন, গত এক মাসে ১০০-এর বেশি পজিটিভ হয়েছে HCN2. ২ মাস ধরে বেশি পাচ্ছি। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ফলে, কলকাতার অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হয়েছে বেডের টানাটানি। সব মিলিয়ে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মধ্যে সংক্রামক ভাইরাস নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ শহরবাসীর।বাড়ছে আতঙ্ক।
প্রসঙ্গত, বর্ষা আসতেই রাজ্যজুড়ে বেড়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক মাসে রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন। জুনের মাঝামাঝি মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। জুলাই মাসে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮০০। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজ্যের ১৬ টি জেলায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬৭ জন।দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ৩৫৬। হুগলিতে ২৬৫।
অন্যদিকে, হাওড়ায় ২৪১ জন ও মালদায় ২৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।ষষ্ঠ স্থানে থাকা কলকাতার আক্রান্তের সংখ্য়া ১৭৬।বাঁকুড়ায় আক্রন্তের সংখ্যা ১৬২ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার আক্রন্ত ১১০। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন ৬৭ হাজার ২৭১ জন। ২০২৩ সালে রাজ্য়ে ডেঙ্গি সংক্রমণ ভেঙে দেয় ১২ বছরের রেকর্ড। ওই বছর রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার জন। তার পরের বছর আক্রান্ত হন ৩১ হাজার ১০০ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বর্ষা ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে যাতে ডেঙ্গির উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।