ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর : বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty) বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করায় অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে 'কারণ দর্শানোর' নোটিস ধরালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩ দিনের মধ্যে তাঁকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বাঙালিকে 'অপমান' করার অভিযোগে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই অধ্যাপক। এর আগে একাধিক বার সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এমনকী অধ্যাপক পদ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। যদিও পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কাজে ফেরাতে বাধ্য হন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।


কিছু দিন আগে বিশ্বভারতীর তরফে ওয়েবসাইটে নামহীন একটি বার্তালাপ প্রকাশ করা হয়। যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার আবহে সেই বার্তালাপে দাবি করা হয়, সংশ্লিষ্ট ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে সমাজমাধ্যমে (Social Media) বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। বাঙালিকে ‘ভণ্ড’ ও ‘কাঁকড়ার জাত' বলা হয় বার্তালাপে। 


শুধু তা-ই নয়, উপাচার্যের দেওয়া বার্তালাপে অন্যদিকও তুলে ধরা হয়। তাতে দাবি করা হয়, “বিশ্বভারতী তার অতীত খ্যাতি হারিয়েছে। ফলস্বরূপ এই প্রতিষ্ঠান কখনও কখনও উপহাসের কারণ হয়ে উঠেছে। এখানে, স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক, আশ্রমিক, স্থানীয় লোকজন বিশ্বভারতী থেকে অবৈধ অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এমন উপায় অবলম্বন করেন, যা আইনত-সম্মত নয়।”


এমনকী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশকে নিশানা করে বলা হয়, “যাঁরা (বিশ্বভারতী থেকে) মোটা বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, তাঁরা এর যোগ্য কি ? তাঁদের শিক্ষাগত দক্ষতার মূল্যায়ন করার সুযোগ আমি কখনওই পাইনি। কারণ, তাঁরা দিনের আলোয় উপস্থিত হন না।" এর পরেই বিশ্বভারতীর অর্থনীতির শিক্ষক তথা শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ-র সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।


গত অগাস্ট মাসেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় যান বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক অধ্যাপক। শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ওই অধ্যাপকের অভিযোগ, যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা ছাত্রীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন উপাচার্য।


জনা কয়েক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে সেখানে। অভিযোগকারিণী দুই তরুণী, বিশ্বভারতীর ছাত্রী হিসেবেই পরিচয় দেন তাঁরা।


বিশ্বভারতীর ছাত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি, কয়েক জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে সামনে আসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পর পর দু'টি পোস্ট করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্ট। ওই দুই তরুণী জানান, বিশ্বভারতীতে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাঁরা। 


বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয় কাটাছেঁড়া। সেই পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পাল্টা অভিযোগ করেন যে, বিশ্বভারতীর নামে অযথা কলঙ্কলেপন করার জন্য প্রতিষ্ঠানের ভিতরের এবং বাইরের এক শ্রেণির অপশক্তি অত্য়ন্ত সক্রিয়। যেনতেন প্রকারে বিশ্বভারতীকে কলুষিত করে, এরা তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে সিদ্ধহস্ত।