ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও আবীর ইসলাম, বীরভূম : অধ্যাপক বরখাস্তের পর এবার পড়ুয়াদের সাসপেন্ড। উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দায়ে ৫ ছাত্রকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Viswa Bharati University)। সাসপেন্ড করা হয়েছে বিদ্যাভবনের ২ পড়ুয়া, ভাষাভবন, সঙ্গীত ভবন ও শিক্ষাভবনের একজন করে পড়ুয়াকে। 


গত বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্র বিক্ষোভের একাধিক ঘটনা ঘটেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগের তির উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty) দিকে। আবার পাল্টা কিছু অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্ট করার পাল্টা অভিযোগ করেছেন উপাচার্য। কিছুদিন আগে চলতে থাকা পরিস্থিতির জেরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। গতকাল চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের এক অধ্যাপককে। এর পর এবার উপাচার্য-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য সাসপেন্ড করা হল পাঁচ পড়ুয়াকে। 


প্রসঙ্গত, উপাচার্যর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও শারীরিক হেনস্থার অভিযোগে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের এক অধ্যাপককে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। তুঘলকি শাসন চলছে, পাল্টা চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন অধ্যাপক। তাঁর দাবি, প্রথমে ১ বছর ৯ মাসের সাসপেনশন ভোগ করতে হয়েছে তাঁকে। তারপর নভেম্বরে শোকজ আর ডিসেম্বরে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে।


বিশ্বভারতীর অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। পড়ুয়া মহলে জনপ্রিয় মুখ। বিশ্ববিদ্য়ালয়ের বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে পাশে দেখতে পাওয়া যায় এই অধ্যাপককে। সেই সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ১ বছর ৯ মাস পর, সম্প্রতি, মাস দুয়েক আগে, তাঁকে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।


কিন্তু এরইমধ্য়ে ফের ছাত্রদের আন্দোলনে তাঁকে দেখা যায় বলে অভিযোগ। গত ২৩ নভেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সহ একাধিক দাবিতে, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের একাংশ। উপাচার্য অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয়। আর সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, অধ্য়াপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। ঘটনার ১ সপ্তাহের মাথায় শোকজ করা হয় অধ্যাপককে। তারপর একমাসও পেরোনোর আগেই বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হয় অধ্যাপককে। 


বরখাস্ত নিয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে কাঠগড়ায় তুলে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেছেন,  'যে কোনও রকম টার্মিনেট এত বড় একটা ডিসিশন সেটা করতে গেলে প্রথমে শোকজ করতে হয়। তারপরে চার্জশিট দিতে হয়। তারপরে এনকোয়ারি কমিটি বসাতে হয়। ক্রশ এক্সামিনের সুযোগ দেওয়া হয়। কিছু না করে, ইসি ডেকে এইভাবে কতগুলো ওয়াইল্ড অ্য়ালিগেশন, আষা়ঢ়ে গল্প ফেঁদে এভাবে টার্মিনেট করা, এটা একমাত্র বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তীর।' পক্ষেই শোভা পায়।


আরও পড়ুন- অনুব্রতর বিরুদ্ধে শিবঠাকুরের অভিযোগপত্রে একাধিক মিসিং লিঙ্ক, প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজে পুলিশ