দুবরাজপুর : অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে শিবঠাকুর মণ্ডলের (Shibthakur Mondal) অভিযোগপত্রে একাধিক মিসিং লিঙ্ক। এক নিরাপত্তারক্ষীর সামনে খুনের চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত, এমনই দাবি করেছেন শিবঠাকুর। কে সেই প্রত্যক্ষদর্শী, তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সেই সময় অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্বে কে বা কারা ছিলেন ? সেই দিন ছুটিতেই বা কারা ছিলেন ? তা জানতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে সেই ব্যক্তির স্কেচ তৈরি করা হবে, খবর পুলিশ সূত্রে।
পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন কেষ্ট। আর এদিকে বাইরে একের পর এক বয়ান বদল করে চলেছেন শিবঠাকুর। সেই শিবঠাকুর, যাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই, জেল থেকে আপাতত দুবরাজপুর থানায় রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। আর শিবঠাকুর সত্য়ি বলছেন, না কি তাঁকে দিয়ে কেউ অভিযোগপত্র লিখিয়েছেন, এই প্রশ্নেই এখন জোর জল্পনা ! কারণ, তাঁর বক্তব্য়ে নানা অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। অভিযোগকারী একদিকে মুখে বলেছেন, গত বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে ঘটনাটি ঘটেছিল। কিন্তু তাঁরই দায়ের করা অভিযোগপত্রে আবার লেখা হয়েছে, এ বছরের মে মাসের প্রথম দিকে উনি (অনুব্রত মণ্ডল) আমাকে দুবরাজপুর পার্টি অফিসে ডেকে পাঠান।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, মুখে গত বছরের ঘটনা বলে দাবি করলেও, অভিযোগপত্রে কেন এ বছরের মে মাসে ঘটনাটি ঘটে বলে উল্লেখ করলেন শিবঠাকুর ? এই প্রশ্নের উত্তরে দু-দিনে, দু-রকম দাবি করলেন শিবঠাকুর।
দেড় বছর পর কেন অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলেন শিবঠাকুর?
যেদিন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য় ইডিকে ছাড়পত্র দেয় আদালত, সেদিনই দুবরাজপুর থানায় শিবঠাকুর মণ্ডল অভিযোগ দায়ের করেন অনুব্রতর বিরুদ্ধে! আর তারপরই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি অনুব্রত'র দিল্লি যাত্রা আটকাতেই পরিকল্পনা করে অভিযোগ করা হয় থানায় ?
বিরোধীরা দাবি করছে, অনুব্রতর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা শিবঠাকুরের খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করাটা, পুরোটাই সাজানো! আর তাঁদের এই অভিযোগকেই কার্যত সিলমোহর দিয়েছে বীরভূমেরই এক দাপুটে নেতার এই মন্তব্য়!
বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্য়ায়ের কাছে সংবাদ মাধ্যমের তরফে জানতে চাওয়া হয়, বিজেপি বলছে, যে অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি-যাত্রা আটকানোর জন্য় এই ব্য়বস্থা। এর উত্তরে মলয় মুখোপাধ্য়ায় বলেন, হ্যাঁ, ব্য়বস্থাই তো! ব্য়বস্থাই, একশোবার ! ইডি এবং সিবিআই যেখানে মিথ্য়া করে একটা লোককে বিনা দোষে, দিনের পর দিন আটকে রাখার চেষ্টা করছে, আমরাও চেষ্টা করছি সেই লোকটাকে বাঁচাবার।
এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আনা খুনের চেষ্টার অভিযোগের ৪ দিন পর শিবঠাকুর মণ্ডলের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। দুবরাজপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন শিবঠাকুর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশের হেফাজত হয়েছে বীরভূমের দাপুটে জেলা তৃণমূল সভাপতির। আর সেই কারণেই আপাতত তাঁকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারছে না ইডি।
আরও পড়ুন ; অনুব্রতর বিরুদ্ধে আনা খুনের চেষ্টার অভিযোগের ৪ দিন পর গোপন জবানবন্দি রুজু শিবঠাকুরের