সুনীত হালদার, হাওড়া : গত ৩৮ দিন ধরে তিলোত্তমার বিচার চেয়ে রাজ্যজুড়ে চলছে আন্দোলন। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। শারদ উৎসবের বাকি আর ২১ দিন। কিন্তু বাংলাজুড়ে যেন শোকের ছায়া। প্রতিবাদীদের একাংশের মতে, পুজো হোক, তবে উৎসব হোক বিচার পেলে। গণেশ পুজো ও বিশ্বকর্মা পুজো হয়ে গেল। এসময়টায় অন্যান্যবার সারা বাংলায় উৎসবের আবহ তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু এবার আরজি কর মেডিক্যালে চিকিৎসকের মর্মান্তিক পরিণতির কথা ভেবে, অনেকেই উৎসবের জৌলুসে রাশ টানছেন।
হাওড়া একসময় ছিল শিল্পনগরী। এখন শিল্পের সেই গরিমা নেই। তালা পড়েছে বহু কলকারখানায়। ধুঁকছে শিল্পগুলো। তাই এমনিতেই বিশ্বকর্মা পুজোর আড়ম্বর কমেছে। তার উপর এবার আবহটা অন্যরকম। এবার তাই বিশ্বকর্মা পুজোয় কারখানায় ঘট পুজো করে অভিনব-প্রতিবাদ জানালেন হাওড়ার এক ছোট কারখানার মালিক।
প্রতি বছর মধ্য হাওড়ার কদমতলা এলাকার ছোট কারখানার মালিক প্রদীপ্ত রায় মাঝারি মাপের বিশ্বকর্মা প্রতিমা এনে পুজো করেন। তবে এই বছর আরজিকর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। নিয়ম করে প্রতিদিনই প্রতিবাদ মিটিংয়ে যাচ্ছেন। মিছিলে সামনের সারিতে থাকেন প্রদীপ্ত। 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগানে রোজই গলা মেলান। তাই এবার পুজোয় জাঁকজমক নয়, তিনি বিশ্বকর্মা পুজো করলেন এক্কেবারে নিয়ম মেনে ঘটে পুজো করে। এদিনও তিনি আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ সামিল হন। এই ব্যবসায়ীর গ্রিল তৈরির ছোট কারখানা আছে। সেখানে এবার প্রতিমার বদলে তিনি ঘট পুজোর ব্যবস্থা করেন তিনি। শুধু তাই নয় ঘটের চারপাশে তিলোত্তমার বিচার চাই, পোস্টারও লাগিয়য়েছেন।
এদিন ডিওয়াইএফআই এর তরফে আকাশ দখল - অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ঘুড়ি তিনি ঘটের চারপাশে সাজিয়েছিলেন। প্রদীপ্ত জানিয়েছেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তাই প্রতিবাদে সামিল হতে এবারে মূর্তির বদলে কারখানায় ঘট পুজো করেছেন। তিনি আরও বলেন, এ বছর পুজো হোক, তবে উৎসবকে দূরে সরিয়ে রেখে। যতদিন না তিলোত্তমা সুবিচার পাবেন, ততদিন প্রতিবাদ চলবে।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশ দখল করে বিচারের দাবি জানানো হয় । শিশু-কিশোরদের হাতে লাটাই, আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে আকাশে ওড়ে লাল-নীল-কালো রঙের ঘুড়ি। কাটাকুটি নয়, সংহতির ঘুড়ি উড়ুক, এই বার্তা নিয়ে কচিকাঁচাদের পাশে দাঁড়িয়ছিল যাদবপুরের কিশোর বাহিনী। রাজ্যজুড়ে সংগঠনের বিভিন্ন শাখা থেকে এভাবেই আজ আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। শিশু-কিশোরদের সমাজ সচেতন করাই লক্ষ্য জানান আয়োজকরা।
আরও পড়ুন :