বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: কোন দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এগরা বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ? এক দিকে যখন নিথর দেহ ও দেহাংশ উদ্ধার করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন, তখনই তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি যদি তৃণমূলই হবেন, তা হলে রাজ্য পুলিশ বেআইনি বাজির মামলায় কেন তাঁকে গ্রেফতার করবে? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। এদিকে বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন ভানু বাগ। কার্যত একসুর স্থানীয় কংগ্রেসও।
তুঙ্গে তরজা...
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁর বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরক ঘটেছে, তিনি আগেও গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, 'ওই ব্যক্তি কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে আবার বেআইনি কারখানা চালু করেছিল।' তাঁর আরও দাবি, কয়েক মাস আগে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতটি দখল করেছিল বিজেপি। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, গত ফেব্রুয়ারিতে সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। তার দখল নেয় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, 'এটা তৃণমূল করেনি। যাদের মদতে হয়েছে, তারাই এখন উস্কানি দিচ্ছে।' যদিও বিজেপির বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বেআইনি বাজি কারখানার আড়ালে বোমা তৈরি করছিল তৃণমূল। স্থানীয় কংগ্রেসেরও বক্তব্য, ভানু ওরফে কৃষ্ণপদকে তৃণমূলেরই নেতা। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছেন, 'তৃণমূল হলে কেন রাজ্য পুলিশ বেআইনি বাজির মামলায় গ্রেফতার করবে?' কিন্তু তা হলে কী ভাবে, কার প্রশ্রয়ে তার পরও ওই কারখানা চলছিল? স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, বাজি কারখানার আড়ালে সেখানে অনেক কারবার চলত। এবং এই প্রশ্রয়ের জন্য পুলিশই দায়ী, মনে করেন তাঁরা। পুলিশ এসে টাকা নিয়ে যেত, জানাচ্ছেন কেউ কেউ। শুধু তাই নয়। ওই এলাকায় আগেও বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। তবে অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তাঁদের বক্তব্য একটাই। ভানু বাগ আগে সিপিএম করতেন, এখন ব্যবসা করেন।
বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন দেহ...
এদিন সকাল ১১টা নাগাদ বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। সন্ধে পর্যন্ত যা তথ্য, তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯। ৫ জন আহত হয়েছেন বলে খবর। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ১০০ মিটার দূরে বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায় ২ কিমি দূরে! রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে দেহ। কারখানা লাগোয়া ২টি পুকুরে ছিন্নভিন্ন দেহ মেলে। ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও এনআইএ তদন্ত চেয়ে চিঠি লিখছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন:গরমের মরসুমে পাতে এই পাঁচ ফল থাকলে দূর হবে ত্বকের রুক্ষ-শুষ্ক ভাব, বাড়বে জেল্লা