কলকাতা: ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে সংঘাত চরমে। সেই নিয়ে এবার চিঠির পাল্টা চিঠি। রাজভবনে ধূপগুড়ির জয়ী তৃণমূলপ্রার্থীর শপথগ্রহণ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। এবার তার পাল্টা চিঠি দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। রাজভবন নয়, পাল্টা বিধানসভাতেই শপথগ্রহণ চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন তিনি। 


ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে সম্প্রতি জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়। তাঁর শপথগ্রহণ ঘিরেই রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে তীব্র টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। নির্মলচন্দ্র তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের হওয়ায়, রাজভবনে তাঁর শপথগ্রহণ হলে গরিমা বাড়বে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে সম্প্রতি চিঠি দেন রাজ্যপাল বোস। সেই চিঠি স্পিকার বিমানকে ফরোয়ার্ড করেন মুখ্যমন্ত্রী। 


এবার রাজ্যপালকে তারই পাল্টা চিঠি পাঠালেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে তিনি লিখেছেন, 'আপনি বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করান। বিধানসভা সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের। এতে গরিমা বাড়বেই'।  এখনও পর্যন্ত রাজভবনের তরফে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে দুই তরফে সংঘাত চরমে উঠেছে। তারই ফলশ্রুতি এই চিঠির পাল্টা চিঠি। 


আরও পড়ুন: CV Ananda Bose: ধনকড়ের পথেই রাজ্যপাল বোস, স্পিকারকে বাদ দিয়ে চিঠি ডেপুটিকে, শপথ ঘিরে চরমে সংঘাত


মঙ্গলবারই বিধানসভায় নির্মলের শপথ নিয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে, স্পিকারের উদ্দেশে লেখা হয়নি ওই চিঠি। চিঠি দেওয়া হয় ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নির্মলকে শপথগ্রহণ করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় তাঁকে। তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার স্পিকারকে অসম্মান করা হয়েছে, তিনি শপথগ্রহণ করাবেন না বলে জানিয়ে দেন। 


এর আগে, বাবুল সুপ্রিয়র সময়ও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ডেপুটি স্পিকারকে শপথগ্রহণ করানোর নির্দেশ দেন। পরিস্থিতি চরমে উঠলে হস্তক্ষেপ করেন মমতা। শেষ মেশ বিমানই শপথবাক্য পাঠ করান বাবুলকে। রাজ্যপাল বোস পূর্বসূরি ধনকড়কেই অনুসরণ করছেন বলে তাই উঠছে অভিযোগ। সব মিলিয়ে রাজ্য এবং রাজভবনের মধ্যে এই সংঘাত পরিস্থিতি বেনজির হয়ে উঠেছে।


বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "আমি রাজভবনের প্রতিনিধি নই। রাজ্যপালের মুখপাত্রই নই আমি। রাজ্যপাল কি এক্তিয়ার বহির্ভূত কিছু করেছেন? রাজ্যপাল হয়তো মনে করেছেন, ডেপুটি স্পিকারের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাউসের প্রতি তাঁরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাঁকেও যে আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে, তার জন্যই হয়ত এই মর্যাদা দিয়েছেন।"


স্পিকারকে বাদ দেওয়া নিয়ে অন্য তত্ত্বও তুলে ধরেন শমীক। কটাক্ষের সুরে বলেন, "স্পিকারের তো দৃষ্টিশক্তির অভাব রয়েছে! কৃষ্ণকল্যাণী, মুকুল রায়কেও এখনও বিজেপি বলে মনে করছেন। দেখতে বোধহয় একটু সমস্যা আছে ওঁর। কাকে শপথ গ্রহণ করাতে গিয়ে, কাকে করাবেন, পরে আবার চক্রান্তের গল্প উঠে আসবে। একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার জন্যই হয়ত রাজ্যপাল স্পিকারকে ভরসা করতে পারেননি।"